৩ মে, ২০২৪
২০ বৈশাখ, ১৪৩১
Mirror Times BD

বিএনপির বিরুদ্ধে কোনও রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী

বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা কোনও মামলাই রাজনৈতিক নয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অগ্নিসংযোগ, গ্রেনেড হামলা, আগ্নেয়াস্ত্র চোরাচালান ও দুর্নীতির মতো সুনির্দিষ্ট ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্তরাই এ সংক্রান্ত মামলার আসামি হয়েছেন।

তিনি বলেন, “আজকে তারা (বিএনপি) সব জায়গায় কান্নাকাটি করে বলছে– তাদের বিরুদ্ধে মামলা। তাদের জিজ্ঞেস করতে হবে মামলাগুলো কীসের? অগ্নিসন্ত্রাস, অস্ত্রপাচার, গ্রেনেড হামলাসহ বিভিন্ন অপরাধের মামলা। তারা অপরাধ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সেটাই তো বাস্তবতা।” এসব মামলা দ্রুত শেষ করে এগুলোর শাস্তি দিয়ে দেওয়া উচিত বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকালে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবনে সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ কৃষক লীগের ৫২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে দেওয়া ভাষণে এ কথা বলেন।

২০১৩ ও ১৪ সালে নির্বাচন বানচালের জন্য এবং পরবর্তী সময়ে বিএনপি-জামায়াতের আগুন সন্ত্রাস ও সহিংসতার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, তারা ৩ হাজার ৮০০টি গাড়ি পুড়িয়েছে, বাস, লঞ্চ ও রেল পুড়িয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে না তো কী হবে।

তিনি বলেন, ওদের বিরুদ্ধে কোনও মামলাই তো পলিটিক্যাল মামলা না, প্রত্যেকটা মামলা হচ্ছে অগ্নিসন্ত্রাসের মামলা। তারা মানুষ হত্যা করেছে আগুন দিয়ে। নির্বাচন ঠেকাতে গিয়ে তারা রেলে আগুন দিয়ে মা-শিশুকে পুড়িয়ে মেরেছে, যারা এগুলো করলো তাদের বিরুদ্ধে কি মামলা হবে না?

বিএনপির নেতাকর্মী গ্রেফতার সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কান্নাকাটি করে তারা সব জায়গায় বলছে এত লাখ লোক তাদের গ্রেফতার। সারা দেশে যত জেলখানা আছে সেগুলোর একটা ধারণ ক্ষমতা রয়েছে, তারা যত লাখ গ্রেফতার হয়েছে বলছে জেলখানাগুলোর তত ধারণক্ষমতা নেই।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, “তারা (বিএনপি) যেভাবে বলছে– তাদের ৬০ লাখ লোক গ্রেফতার হয়েছ, ৬০ লাখ লোক ধারণ করার ক্ষমতাও নাই এসব জেলে। তারপরও যতটুকু ধারণ ক্ষমতা আছে সবই বিএনপির লোক এটাই তো তারা বলতে চাচ্ছে। তার মানে বাংলাদেশে যত অপরাধ সব অপরাধ করে বিএনপি।”

শেখ হাসিনা বলেন, তাদের ভাগ্য ভালো আমরা ক্ষমতায় আছি, আমরা তাদের মতো প্রতিশোধপরায়ণ না, তাই তারা এখনও কথা বলার সুযোগ পায়। তারা সারা দিন কথা বলে মাইক লাগিয়ে, তারপর বলবে কথা বলার সুযোগ পায় না।

বিরোধী দলে থাকার সময়কার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ অফিসে তো আমরা ঢুকতেই পারতাম না। কীভাবে তারা অত্যাচার করেছে আমাদের ওপর, আমরা তো তার কিছুই করি নাই। আমরা প্রতিশোধ নিতে ব্যস্ত থাকিনি। আমরা আমাদের সব শক্তি-মেধা কাজে লাগিয়েছি দেশের উন্নয়নে, দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে।

শেখ হাসিনা বলেন, তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে সমবায়ভিত্তিক কৃষি নিশ্চিত করে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। তিনি দেশের প্রতি ইঞ্চি অনাবাদি জমি চাষের আওতায় আনার মাধ্যমে সার্বিক উৎপাদন বাড়ানোর জন্য তার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমবায়ভিত্তিক কৃষি চালু করে জমির আইল দূর করে বিপুল পরিমাণ আবাদি জমি রক্ষা করা যেতে পারে।

কৃষিতে গবেষণার পাশাপাশি কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “কৃষি গবেষণায় বাংলাদেশ সবচেয়ে সফল। আমাদের সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।”

প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের উদ্যোগে কৃষি খাতের উন্নয়ন এবং খাদ্য সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনার পদক্ষেপগুলোর চুম্বকাংশ তুলে ধরে বলেন, “বাংলাদেশের কৃষি উন্নত হয়েছে। কারণ সরকার কৃষি খাতের গবেষণাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার কৃষি খাতে ২৬ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন সময়োপযোগী ও কার্যকর পদক্ষেপের ফলে দেশে খাদ্য উৎপাদন বেড়েছে। তিনি বলেন, “একসময় যারা নুন-ভাত বা ডাল-ভাতের কথা ভাবতেন, তারা এখন মাছ-মাংস-ডিমের কথা ভাবেন। তাই যারা সরকারের সমালোচনা করেন, তাদের বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত যে বাংলাদেশ উন্নত হয়েছে কিনা।”

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দলের কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানান সংগঠনের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ সরকার বিটু।খবর: বাসসের

⠀শেয়ার করুন

⠀আরও দেখুন

Scroll to Top