অর্থনীতি রিপোর্ট : রপ্তানি আয়ে এলো সুসংবাদ। বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে পণ্য রপ্তানি করে ৫৭২ কোটি ৪৩ লাখ মার্কিন ডলার আয় করেছে বাংলাদেশ। একক মাস হিসেবে এটা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রপ্তানি আয়।
ইপিবির তথ্য বলছে, জানুয়ারিতে ৫৭২ কোটি ৪৩ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ১১.৪৫ শতাংশ বেশি। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে রপ্তানি আয় হয়েছিল ৫১৩ কোটি ৬২ লাখ ডলার। এর আগে এক মাসে সর্বোচ্চ রপ্তানি হয়েছিল গত ডিসেম্বরে, তখন মোট রপ্তানি আয় হয়েছিল ৫৩৬ কোটি ৫২ লাখ ডলার।
ইপিবির তথ্য বলছে, রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি হলেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) পণ্য রপ্তানি করে আয় হয়েছে ৩ হাজার ৩২৬ কোটি ডলার। এই আয় গত অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসের তুলনায় ২.৫২ শতাংশ বেশি। নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৭.২৮ শতাংশ কম। অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে রপ্তানির লক্ষ্য ঠিক করা ছিল ৩ হাজার ৫৮৭ কোটি ডলার।
ইপিবির প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে তৈরি পোশাক ছাড়া অধিকাংশ পণ্যের রপ্তানি কমেছে। এর মধ্যে রয়েছে হিমায়িত খাদ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইল, প্রকৌশল পণ্য ইত্যাদি।
তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, প্রথম ৭ মাসে তৈরি পোশাক খাতে পণ্য রপ্তানি হয়েছে ২ হাজার ৮৩৬ কোটি ডলারের। যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেশি। তবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬.২৩ শতাংশ কম। ৭ মাসে পোশাক রপ্তানির আয়ের লক্ষ্য ছিল ৩ হাজার ২৪ কোটি ডলার। আলোচ্য সময়ে নিট পোশাকের রপ্তানি ৮.১৫ শতাংশ বেড়েছে। তবে ওভেন পোশাকের রপ্তানি কমেছে ২.২০ শতাংশ।
তৈরি পোশাকের বাইরে গত ৭ মাসে অন্য পণ্যগুলোর রপ্তানি কমেছে। জুলাই থেকে জানুয়ারি সময়ে পাট ও পাটপণ্যের রপ্তানি আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে ৬.৮৫ শতাংশ। চামড়া ও চামড়া পণ্যের রপ্তানি আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় কম হয়েছে প্রায় ১৪ শতাংশ। এছাড়া হোম টেক্সটাইলের রপ্তানি কমেছে ৩৪.৩৭ শতাংশ। আরও অনেক পণ্যের রপ্তানিই কমার প্রবণতার মধ্যে রয়েছে।
অবশ্য কৃষি পণ্যের রপ্তানি চলতি অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে ৪.৪৪ শতাংশ বেড়েছে এবং প্লাস্টিক পণ্যের রপ্তানি ১৫.৪৮ শতাংশ বেড়েছে।
পোশাকের রপ্তানির ওপর ভর করে সার্বিক রপ্তানি ইতিবাচক ধারায় রয়েছে বলে মনে করছেন উদ্যোক্তারা।
পোশাক শিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) পরিচালক ও মো. মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, পণ্যে বৈচিত্র্য আনার কারণে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেও ভালো করছে বাংলাদেশ। এখন আমরা নতুন নতুন বাজার খুঁজছি। আশা করছি, আগামী দিনগুলোতেও রপ্তানির ইতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকবে।