১১ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৬শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Mirror Times BD

২০ হাজার শিশুর অস্ত্রোপচারে ১ সার্জন

মাসুদ কার্জন, ঢাকা : ১৯৮১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর। এখনকার জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতাল তখন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের ভেতর হৃদরোগের একটি বিভাগ। সেই বিভাগেই সেদিন দেশের প্রথম ১৭ বছরের এক তরুণীর জন্মগত হৃদরোগের অস্ত্রোপচার হয়। অস্ত্রোপচারে অংশ নেন প্রয়াত অধ্যাপক ডা. নবী আলম খান, অধ্যাপক ডা. এস আর খান, অধ্যাপক ডা. খলিলুর রহমান ও জাপানি সার্জন ডা. কোমেই সাজি।

এরপর গত ৪৩ বছরে শিশু হৃদরোগের চিকিৎসায় খুব বেশি এগোয়নি বাংলাদেশ। ঢাকার বাইরে মাত্র একটি ও ঢাকায় পাঁচটি প্রতিষ্ঠানে সীমিত আকারে চিকিৎসা পাচ্ছে রোগীরা। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আবার শিশু হৃদরোগের পূর্ণাঙ্গ বিভাগ রয়েছে দুটি প্রতিষ্ঠানে। শয্যা রয়েছে মাত্র ১৯৭টি। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ৪৮ জন। এর মধ্যে পেডিয়াট্রিক কার্ডিওলজিস্ট ৩২ ও পেডিয়াট্রিক কার্ডিয়াক সার্জন মাত্র ১৬ জন।

বিশেষ করে সার্জন ও সার্জারি ব্যবস্থাপনার অভাবে এ পাঁচ প্রতিষ্ঠানে আট মাসেরও বেশি সময় ধরে অস্ত্রোপচারের (সার্জারি) অপেক্ষায় রয়েছে আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার শিশু। সময়মতো অস্ত্রোপচার করতে না পারায় এসব শিশুর অনেকে মারা যাচ্ছে, অনেকের জটিলতা বাড়ছে ও বেশিরভাগ বাবা-মা তার শিশুকে নিয়ে পাশের দেশ ভারতে চলে যাচ্ছে অস্ত্রোপচারের জন্য। এমনকি প্রতি বছর চিকিৎসার অভাব ও অস্ত্রোপচার-পরবর্তী জটিলতায় মারা যাচ্ছে ৪০ শতাংশ রোগী। দেশে হাতেগোনা যে কয়েকজন শিশু হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ব্যক্তিগত উদ্যোগে এ চিকিৎসাকে এই পর্যন্ত এনেছেন, এমন চারজন চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে দেশে শিশু হৃদরোগ চিকিৎসার এমন চিত্র পাওয়া গেছে।

এ ব্যাপারে জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতাল ইনস্টিটিউটের শিশু কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধান ও বাংলাদেশ পেডিয়াট্রিক কার্ডিয়াক সোসাইটির (পিসিএসবি) মহাসচিব অধ্যাপক ডা. আবদুল্লাহ শাহরিয়ার বলেন, শিশু হৃদরোগ চিকিৎসায় আমাদের এখনো অনেক পথ পেরোতে হবে। শিশু হৃদরোগের বড় একটি জায়গা কার্ডিয়াক সার্জারি। কিন্তু কার্ডিয়াক সার্জারি এখনো তৃণমূল পর্যায়ে আছে। শুধু একটি প্রতিষ্ঠান তাদের সম্পূর্ণ শক্তি নিয়ে মাঠে আছে। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের পূর্ণশক্তি নিয়ে পেডিয়াট্রিক কার্ডিয়াক সেবায় নিয়োজিত হতে পারছে না, ঘাটতি রয়ে গেছে।

সরকারি কোনো জরিপ নেই : দেশে সরকারিভাবে শিশু হৃদরোগের কোনো জরিপ নেই বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) শিশু কার্ডিওলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাখাওয়াত আলম। তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী প্রকোপের হার বিবেচনায় রেখে বাংলাদেশে ধারণা করা হয়, প্রতি এক হাজার জীবিত জন্ম নেওয়া শিশুর মধ্যে ৮-১০ জন শিশু জন্মগত হৃদরোগের শিকার হয়। তবে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের সাবেক শিশু হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) অধ্যাপক ডা. নুরুন্নাহার ফাতেমা একটি গবেষণা অনুযায়ী, প্রতি ১ হাজারে ২৫ জন শিশু জন্মগত হৃদরোগ নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। আর বিএসএমএমইউর দুই বছর আগের গবেষণা অনুযায়ী, প্রতি হাজারে ১৮ জন শিশু জন্মগত হৃদরোগের শিকার। এসব গবেষণার পরিপ্রেক্ষিতে পিসিএসবি জানায়, বাংলাদেশে শিশু হৃদরোগীর সংখ্যা চার লাখ এবং প্রতি বছর নতুন করে ৩০-৫০ হাজার শিশু এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

শিশু হৃদরোগ সম্পর্কে ডা. সাখাওয়াত আলম বলেন, শিশুর হৃদরোগ দুই ধরনের জন্মগত ও সহজাত বা অর্জিত। জন্মগত রোগীরা হৃদরোগ নিয়েই জন্ম নেয়। আর অর্জিত রোগীরা জন্মের পর নানা কারণে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়। এখন মানুষ হাসপাতালে যাওয়ায় জন্মগত হৃদরোগী বেশি শনাক্ত হচ্ছে। অন্যদিকে, মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন এবং দারিদ্র্য কমে যাওয়ায় ও শিক্ষার হার বেড়ে যাওয়ায়, এখন অর্জিত হৃদরোগের হার কমে গেছে।

চিকিৎসা ও সার্জারি ঢাকার ৫ হাসপাতালে, ঢাকার বাইরে একটিতে : ডা. আবদুল্লাহ শাহরিয়ার বলেন, দেশে শিশু কার্ডিয়াক সার্জারি সেভাবে এগোয়নি। মাত্র পাঁচটি হাসপাতালে নিয়মিতভাবে সার্জারি হচ্ছে। এগুলো হলো জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতাল, বিএসএমএমইউ, হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল ও বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল এবং ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।

এ চিকিৎসক আরও জানান, দেশে সরকারিভাবে একমাত্র জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতালে ও বেসরকারি পর্যায়ে হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে পূর্ণাঙ্গ পেডিয়াট্রিক কার্ডিওলজি বিভাগ ও পেডিয়াট্রিক কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগ রয়েছে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পূর্ণাঙ্গ পেডিয়াট্রিক কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগ থাকলেও পেডিয়াট্রিক কার্ডিওলজি বিভাগ নেই।

বেশি সার্জারি হার্ট ফাউন্ডেশনে : খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সবচেয়ে বেশি অস্ত্রোপচার হচ্ছে হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে। ২০২২ সালে এখানে অস্ত্রোপচার হয়েছে ৮১২টি ও ২০২৩ সালে ৯৮১টি। এরপর জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতালে ২০২৩ সালে ২৭৪টি ও এ বছরের জুন পর্যন্ত ১৩৪টি, বিএসএমএমইউতে গত সাড়ে তিন বছরে ৪০০টি ও ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালে গত এক বছরে ১২০টি অস্ত্রোপচার হয়েছে।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আলাদা বিভাগ না থাকায় বড়দের সঙ্গে ভাগাভাগি করে অস্ত্রোপচার করাতে গিয়ে শিশুদের অস্ত্রোপচারের সংখ্যা কমে যাচ্ছে ও অপেক্ষমাণ শিশুর তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে। এভাবে ঢাকার পাঁচ হাসপাতালে কমপক্ষে আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার শিশু গত আট মাসেরও বেশি সময় ধরে অপেক্ষা করছে।

২০ হাজারের জন্য ১ সার্জন ও আড়াই হাজারের জন্য ১ কার্ডিওলজিস্ট : পিসিএসবির তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে এই মুহূর্তে শিশু হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রয়েছেন ৪৮ জন। তাদের মধ্যে কার্ডিওলজিস্ট ৩২ জন ও শিশু কার্ডিয়াক সার্জন ১৬ জন। এর মধ্যে হৃদরোগ হাসপাতালে কার্ডিওলজিস্ট ১৩ ও সার্জন ৬ জন, বিএসএমএমইউতে কার্ডিওলজিস্ট ৬ ও সার্জন ৩ জন ও হার্ট ফাউন্ডেশনে কার্ডিওলজিস্ট ১১ ও সার্জন ৬ জন। বাকি তিনজন অন্যান্য হাসপাতালে কর্মরত রয়েছেন।

চিকিৎসকরা বলছেন, জন্মগত হৃদরোগে আক্রান্ত শিশুদের ২০ শতাংশের মেডিসিন ও ডিভাইস চিকিৎসা লাগে। বাকি ৮০ শতাংশ বা ৩ লাখ ২০ হাজার শিশুর অস্ত্রোপচার প্রয়োজন হয়। সে হিসেবে দেশে ২০ হাজার শিশুর জন্য সার্জন রয়েছেন একজন। অন্যদিকে মেডিসিন-ডিভাইস চিকিৎসা প্রয়োজন ৮০ হাজার শিশুর। সে হিসেবে প্রতি আড়াই হাজার শিশুর চিকিৎসায় কার্ডিওলজিস্ট রয়েছেন একজন।

শয্যা ১৯৭, পূর্ণাঙ্গ বিভাগ দুই হাসপাতালে : চিকিৎসকরা জানান, ঢাকার পাঁচ হাসপাতালের মধ্যে শিশু হৃদরোগীদের জন্য সুনির্দিষ্টভাবে শয্যা আছে মাত্র ১৯৭টি। অর্থাৎ ২ হাজার ৩০ রোগীর জন্য একটি শয্যা। এর মধ্যে জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতালে পেডিয়াট্রিক কার্ডিওলজি বিভাগে ৫৬টি সাধারণ, ১৩টি আইসিইউ (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) ও আটটি এইচডিইউ (হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিট) শয্যা রয়েছে। কিন্তু পিআইসিইউ, ইনকিউবেটর ও ওয়ার্মারসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতির অভাবে এইচডিইউ বিভাগে জটিল হৃদরোগ শিশুরা সেবা পাচ্ছে না। আর হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে শয্যা রয়েছে ১০০টি।

বিএসএমএমইউতে শিশু কার্ডিয়াক সার্জারি আলাদা কোনো বিভাগ নেই। বড়দের মধ্যে শিশু কার্ডিয়াক সার্জারির ৮টি ও শিশু কার্ডিওলজির ১২টি শয্যা রাখা হয়েছে। ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালে শিশু হৃদরোগীর জন্য আলাদা শয্যা ও শিশু কার্ডিয়াক সার্জন নেই। এখানকার কার্ডিওলজিস্ট ও কার্ডিয়াক সার্জনরা বড় ও শিশু উভয় ধরনের হৃদরোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছেন।

৮০% অস্ত্রোপচার বাইরে, দেশে ২০% : ডা. আবদুল্লাহ শাহরিয়ার বলেন, মোট রোগীর মধ্যে যে ৮০ শতাংশ শিশুর অস্ত্রোপচার লাগে, প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, লোকবল ও যন্ত্রপাতির অভাবে সেসব শিশুর মাত্র ২০ শতাংশ সার্জারি হচ্ছে বাংলাদেশে। বাকি ৮০ শতাংশ চলে যাচ্ছে ভারত বা অন্য কোনো দেশে।

এ ব্যাপারে ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের কার্ডিয়াক সার্জারির (অ্যাডাল্ট অ্যান্ড পেডিয়াট্রিক) অধ্যাপক ও সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. মো. রোকনুজ্জামান সেলিম বলেন, অবকাঠামো লজিস্টিক সাপোর্ট ম্যান পাওয়ার এসবের সমন্বয় না পারার কারণে চাইলেও সার্জারি করা যায় না। বাধ্য হয়ে রোগীরা দেশের বাইরে যায়।

এ ব্যাপারে বিএসএমএমইউর কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগের পেডিয়াট্রিক কার্ডিয়াক সার্জন ও সহকারী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতাউল্লাহ বলেন, বিএসএমএমইউতে বর্তমানে ৭৫০ রোগী অপেক্ষা করছে সার্জারির জন্য। সার্জারি করে আমরা শেষ করতে পারি না। কারণ এটা শুধু সার্জনের ওপর নির্ভরশীল না, টিমওয়ার্ক।

চিকিৎসার অভাবে মৃত্যু ৪০%, সার্জারিতে ১৮% : পিসিএসবির তথ্যমতে, প্রতি বছর হৃদরোগে আক্রান্ত প্রায় ৪০ শতাংশ শিশু চিকিৎসার অভাবে মারা যায়। পাশাপাশি সার্জারি-পরবর্তী জটিলতার কারণে ১৮ শতাংশ শিশুর মৃত্যুর তথ্য উঠে এসেছে বিএসএমএমইউর গবেষণায়।

বিএসএমএমইউতে ২০২১ সালের মার্চ-ডিসেম্বর পর্যন্ত ১০ মাসে ৮৮ জন জন্মগত হৃদরোগে আক্রান্ত শিশুর সার্জারি হয়। তাদের মধ্যে মারা যায় ১৬ জন বা ১৮ শতাংশ। পরের বছর জানুয়ারি-ডিসেম্বর পর্যন্ত সার্জারি হয় ১০০ শিশুর ও মারা যায় ১৭ জন বা ১৭ শতাংশ। এরপর গত বছর সার্জারি হয় ৯৯ শিশুর ও মারা যায় ১৯ জন বা ১৯ শতাংশ।

এ মৃত্যুর কারণ হিসেবে ডা. মোহাম্মদ আতাউল্লাহ বলেন, সার্জারিতে আউটকাম নির্ভর করে শুধু অপারেশন না, অপারেশনের পর ব্যবস্থাপনার ওপর। সেই ব্যবস্থাপনায় ঘাটতি রয়েছে। এখানে ইনটেনসিভ নেই। আইসিইউতে প্রত্যেক রোগীর জন্য একজন নার্স থাকতে হবে। এখানে চার-পাঁচজন রোগীকে একজন নার্স দেখাশোনা করে। নিউনেটাল আইসিইউতে অনেক সমস্যা। কার্ডিয়াক সার্জন ও কার্ডিওলজিস্ট আছেন। কিন্তু ডেডিকেটেড বিভাগ এখনো তৈরি হয়নি।

সীমিত সরকারি প্রণোদনা, আছে অন্য সংকটও : চিকিৎসকরা জানান, জন্মগত শিশু হৃদরোগীরা বেশিরভাগই গরিব। তারা অপারেশনের ব্যয় বহন করতে পারে না। সেজন্য সরকারিভাবে বিএসএমএমইউতে বিনামূল্যে অপারেশন প্রকল্প থেকে দরিদ্র রোগীদের সর্বোচ্চ দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত দেওয়া হয়। চলতি অর্থবছরের টাকা ছাড় না হওয়ায় এখন সেই প্রকল্প বন্ধ। এ ছাড়া বিএসএমএমইউতে গত সাড়ে তিন বছর ধরে কাজ করছেন ভারতীয় সার্জন অধ্যাপক ডা. গাউস ইজাজ আহমেদ সেলিম। গত ৩০ আগস্ট তার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ শেষ হয়ে গেছে। এ দুই কারণে এখানে জন্মগত শিশু হৃদরোগীদের অস্ত্রোপচার কমে গেছে।

এ ক্ষেত্রে অন্যান্য দেশে সরকারি প্রণোদনার তথ্য তুলে ধরে ডা. মো. রোকনুজ্জামান সেলিম বলেন, ভিয়েতনামে ১৬ বছরের নিচে শিশুদের বিনামূল্যে সব ধরনের চিকিৎসা দেয় সরকার। নেপালে জন্মগত হৃদরোগে আক্রান্ত শিশুরা চিকিৎসার জন্য ১ লাখ রুপি দেয়। ভারতে সরকারের শিশু সাথী নামে একটি প্রকল্পের অধীনে সরকারি-বেসরকারি সব হাসপাতাল বিশেষ ছাড়ে চিকিৎসা দেয় শিশু হৃদরোগীদের। কোরিয়া ও শ্রীলঙ্কাতেও সম্পূর্ণ বিনামূল্যে চিকিৎসা হয়।

কিন্তু বাংলাদেশে চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত উদ্যোগ প্রশংসনীয় বলে মন্তব্য করেন ডা. আব্দুল্লাহ শাহরিয়ার। তিনি বলেন, আমাদের হাসপাতালে আমরা সৌদি আরব-কাতারসহ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সংস্থা থেকে ফান্ড সংগ্রহ করে দরিদ্র শিশুদের চিকিৎসা চালাচ্ছি।

ডা. মো. রোকনুজ্জামান সেলিম বলেন, আমি যুক্তরাষ্ট্র যুক্তরাজ্যসহ অনেক দেশকে সংগঠিত করে একটা সিস্টেম ডেভেলপ করেছি। আমাদের হাসপাতাল এখন দরিদ্র শিশুদের মোট চিকিৎসা ব্যয়ে ৩০ শতাংশ ব্যয় ছাড় দিচ্ছে। এমনকি যার যা সামর্থ্য আছে, সে সেই পরিমাণ টাকা দিয়েই তিন লাখ টাকার অপারেশন করতে পারবে। এ পলিসির কারণে শেষ পাঁচ বছরে সুবিধাবঞ্চিত ৫০০ শিশুর ওপেন হার্ট সার্জারি হয়েছে প্রায় বিনামূল্যে।

চিকিৎসকদের পরামর্শ : ডা. আব্দুল্লাহ শাহরিয়ার বলেন, দেশে শিশু কার্ডিওলজি বিভাগে মেডিসিনের কোর্স থাকলেও সার্জারির কোর্স নেই। ফলে নতুন চিকিৎসক তৈরি হচ্ছে না। চিকিৎসক তৈরি করতে হবে। পেডিয়াট্রিক কার্ডিওলজিতে যারা সার্জারি করে তাদের আয় অ্যাডাল্ট কার্ডিওলজির সার্জানদের মতো না। এজন্য এসব প্রতিষ্ঠান ও চিকিৎসকদের লালন-পালনে সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসতে হবে।

এ ব্যাপারে বিএসএমএমইউর শিশু কার্ডিওলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাখাওয়াত আলম বলেন, আর্থিক সংকট চিকিৎসার ক্ষেত্রে একটা বড় চ্যালেঞ্জ। সরকারি কোনো প্রকল্পের মাধ্যমে যদি শিশু হৃদরোগীদের চিকিৎসায় নিয়মিত আর্থিক সহযোগিতা করা যেত, তাহলে চিকিৎসা আরও বাড়ত।

⠀শেয়ার করুন

loader-image
Dinājpur, BD
ডিসে ১১, ২০২৪
temperature icon 15°C
scattered clouds
Humidity 48 %
Pressure 1015 mb
Wind 3 mph
Wind Gust Wind Gust: 3 mph
Clouds Clouds: 47%
Visibility Visibility: 10 km
Sunrise Sunrise: 06:41
Sunset Sunset: 17:15

⠀আরও দেখুন

Scroll to Top