ঢাকা : ‘ব্রেন হেলথ অ্যান্ড প্রিভেশন’ প্রতিপাদ্য নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ‘বিশ্ব ব্রেন টিউমার দিবস ২০২৪’ পালিত হয়েছে। রবিবার (৯ জুন) দুপুরে দিবসটি উপলক্ষে বিএসএমএমইউতে একটি শোভাযাত্রা এবং শহীদ ডা. মিল্টন হলে একটি বৈজ্ঞানিক সেমিনারের আয়োজন করে বাংলাদেশ সোসাইটি অব নিউরোসার্জনস। সেমিনারে বলা হয়, বাংলাদেশে বছরে প্রায় ২০ হাজার মানুষ ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত হয়। এরমধ্যে প্রতি বছর তিন হাজার ব্রেইন টিউমার সার্জারি হচ্ছে।
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে গণসচেতনতামূলক শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভার উদ্বোধন করেন বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. দ্বীন মোহা. নূরুল হক। এতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ সোসাইটি অব নিউরোসার্জনসের সভাপতি বিএসএমএমইউ’র নিউরোসার্জারি বিভাগের অধ্যাপক এবং সার্জারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ সোসাইটি অব নিউরোসার্জনসের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. শফিকুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরোসার্জারি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আফজাল হোসেন।
সেমিনারে বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উপস্থান করেন সহযোগী অধ্যাপক ডা. আতিকুর রহমান, সহকারী অধ্যাপক ডা. কে এম আতিকুল ইসলাম ও সহকারী অধ্যাপক ডা. সুমন রানা ব্রেন টিউমারের ওপর পৃথক তিনটি পেপার উপস্থাপন করেন।
অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ডা. জয়নুল ইসলাম, অধ্যাপক ডা. ধীমান চৌধুরী, অধ্যাপক ডা. জাহিদ হোসেন, অধ্যাপক ডা. ফজলে এলাহী মিলাদ প্রমুখ রাজধানীর বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিউরোসার্জনস ও রেসিডেন্টরা উপস্থিত ছিলেন।
সেমিনারে বলা হয়, উন্নত বিশ্বে প্রতি এক লাখ মানুষের মাঝে ১৫ জন মানুষ ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত হয়। তবে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে প্রতি এক লাখ মানুষের মাঝে চার জন মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হয়। বিভিন্ন ধরনের রেডিয়েশনসহ বিভিন্ন কারণে ব্রেন টিউমার হতে পারে। সেমিনারে বক্তারা বলেন, তরুণ প্রজন্মের নিউরোসার্জনরাই সারা বিশ্বে বাংলাদেশের নেতৃত্বে দেবে। একইসঙ্গে তরুণ নিউরোসার্জনরা অনেক দক্ষ ও আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর চিকিৎসা দিতে পারদর্শী। আধুনিক ও প্রযুক্তিনির্ভর ব্রেন টিউমার অপারেশনে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে চলছে। বাংলাদেশে বছরে প্রায় ২০ হাজার মানুষ ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত হয় এবং প্রতি বছর তিন হাজার ব্রেইন টিউমার সার্জারি হচ্ছে। নিউরোসার্জিক্যাল সেন্টারগুলোকে আধুনিক যন্ত্রপাতি সুসজ্জিত করলে এবং দেশের সব জেলা হাসপাতালে নিউরোসার্জারি চালু করলে— দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ব্রেন টিউমার, হেড ইনজুরি প্রভৃতি বিষয়ে চিকিৎসার সুযোগ পাবে। সময় মতো ব্রেন টিউমার অপারেশন করলে রোগী ভালো হয় এবং মৃত্যুঝুঁকি ও পঙ্গুত্ব কমে যায়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ডা. দ্বীন মোহা. নূরুল হক বলেন, বাংলাদেশে নিউরো সার্জারির অনেক উন্নতি হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় নিউরোসার্জারির উন্নয়নে কাজ করছে। সরকারি হাসপাতালে আধুনিক যন্ত্রপাতি দেওয়া গেলে দেশে বিশ্বমানের নিউরোসার্জারি সেবা দেওয়া যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত উদ্যোগে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। দেশের ২০টি বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে নিউরোসার্জারি চালু আছে। নিউরোসার্জারিতে দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে বিএসএমএমইউ, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ, নিনস, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ, কম্বাইন্ড মেডিক্যাল হসপিটাল, রংপুর মেডিক্যাল কলেজে এমএস নিউরো সার্জারি কোর্স চালু করা হয়েছে। আশা করি, ২০৩২ সালে সব জেলা হাসপাতালে নিউরোসার্জারি বিভাগে সেবা চালু হবে । এতে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী নিউরো সার্জারির সেবা পাবেন।