১৩ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৯শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Mirror Times BD

পঞ্চগড়ের তাপমাত্রা ৮.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বেড়েছে মানুষের দুর্ভোগ

পঞ্চগড় প্রতিনিধি : পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা আবারও ১০ ডিগ্রির নিচে নেমেছে। তৃতীয় দফায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কবলে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়। এতে করে টানা শীতে বিপর্যস্ত উত্তরের এই প্রান্তিক জনপদ। এ অঞ্চলের জনজীবনে বইছে দুর্ভোগ, তেমনি কঠিন দারিদ্রতায় জীবনযাপন করছেন নিম্ন আয়ের মানুষেরা।

বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৮ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে ভোর ৬টায় একই তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। এ তাপমাত্রা রেকর্ডের মধ্য দিয়ে তৃতীয় দফায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে এ জেলায়।

আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের তথ্যানুযায়ী, নতুন বছরের ৩ জানুয়ারি থেকে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত ১০ ডিগ্রির নিচে তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। তার মধ্যে ৩ জানুয়ারি ৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি, ৪ জানুয়ারি ৮ দশমিক ৪, ৫ জানুয়ারি ৮ দশমিক ৪, ৬ জানুয়ারি ৯ দশমিক ৭, ৭ জানুয়ারি ৮ দশমিক ১ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড হয়ে প্রথম দফায় মাঝারি ও মৃদু শৈত্য প্রবাহ বয়েছে। দ্বিতীয় দফায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ হয়েছিল গত ১৩ জানুয়ারি ৯ দশমিক ৩ ডিগ্রি ও ১৪ জানুয়ারি ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ডে।

বৃহস্পতিবার সকালে তাপমাত্রা রেকর্ডের তথ্যটি জানান জেলার প্রথম শ্রেণির তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ।

তিনি জানান, গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ভোর থেকে ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন এ জনপদ। ঘন কুয়াশার কারণে গতকালও দেখা মিলেনি সূর্য। বিশেষ করে উত্তর-পূর্ব বা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে যে বায়ু প্রবাহিত হওয়ার কারণে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি এ জনপদের সব বয়সী মানুষজন শীত দুর্ভোগে পোহাচ্ছেন।

জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, আজও ভোর থেকেই মেঘ-কুয়াশার আবরনে এ জেলা। কুয়াশার সঙ্গে বৃষ্টির মতো ঝরছে হিমেল শিশির। হিমেল বাতাসে ঝরাচ্ছে শীতের ঝাঞ্জা। এতে করে চরম বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ থেকে শুরু করে শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠরা। খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের পেশাজীবীর মধ্যে পাথর-চা শ্রমিক, দিনমজুর, ভ্যান চালক থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রমজীবীরা বিপাকে পড়েছেন। শীতের কারণে কমে গেছে তাদের দৈনন্দিন রোজগার। পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে দিনযাপন করছেন তারা। প্রয়োজনের বাইরে ঘর থেকে শহরের মানুষজন বের না হলেও জীবিকার তাগিদে নিম্ন আয়ের মানুষগুলো শীত উপেক্ষা করেই কাজে বেরিয়েছেন তারা। শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষদের মিলছে না প্রয়োজনীয় গরম কাপড়। খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করতে দেখা গেছে। নিম্ন আয়ের মানুষরা জানাচ্ছেন, শীতের কারণে দুর্ভোগ আর অভাবের কারণে পরিবার পরিজন নিয়ে কঠিন দারিদ্রতার ভেতর জীবনযাপন করছেন।

বিপাকে পড়েছেন চাষিরাও। ঠান্ডার প্রকোপের কারণে খেতখামারে কাজ করতে পারছেন না। বীজতলা কিছুটা ক্ষতি হচ্ছে। চরম বিপাকে পড়েছে আলু চাষিরা। তীব্র শীতের কারণে ক্ষেতের আলুতে ছত্রাকের আক্রমণ বেড়েছে। পাতা কুকড়ে যাচ্ছে। অতি মাত্রায় শীতের কারণে গাছের বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আর্লি ব্লাইট দেখা দেওয়ায় ফলন কমে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সমস্যা মোকাবেলা করতে গিয়ে ২-১ দিন অন্তর অন্তর ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হচ্ছে। এতে উৎপাদন খরচ কয়েক গুণ বেড়ে যাচ্ছে।

এদিকে শীতের কারণে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে নিউমোনিয়া, অ্যাজমা, হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়াসহ শীতজনিত রোগ। জেলা ও উপজেলার হাসপাতালগুলোর আউটডোরে ঠান্ডাজনিত রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছেন। চিকিৎসার পাশাপাশি শীতজনিত রোগ থেকে নিরাময় থাকতে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করছেন চিকিৎসকরা।

জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, শীতপ্রবণ জেলা হিসেবে প্রতি বছর পঞ্চগড়ে সরকারি-বেসরকারিভাবে পর্যাপ্ত কম্বল বিতরণ করা হয়। এবারও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল এবং ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় থেকে এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ২৮ হাজার শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। তবে এবারে শীতের শুরু নির্বাচনকালীন হওয়ায় পাঁচ উপজেলার ইউএনও এবং অন্যান্য কর্মকর্তাদের মাধ্যমে ইতোমধ্যে প্রাপ্ত শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। তাছাড়া বেসরকারিভাবেও বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে আমাদের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রত্যন্ত এলাকায় শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে। সরকারিভাবে আরও কম্বলের চাহিদা রয়েছে। এজন্য আরও শীতবস্ত্র চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। নতুন করে কম্বল বা শীতবস্ত্র পাওয়া গেলে দ্রুত বিতরণের ব্যবস্থা করা হবে।

⠀শেয়ার করুন

loader-image
Dinājpur, BD
জানু ১৩, ২০২৫
temperature icon 21°C
clear sky
Humidity 39 %
Pressure 1014 mb
Wind 6 mph
Wind Gust Wind Gust: 6 mph
Clouds Clouds: 0%
Visibility Visibility: 10 km
Sunrise Sunrise: 06:53
Sunset Sunset: 17:34

⠀আরও দেখুন

Scroll to Top