বীরগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি : দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলা সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একমাত্র এক্স-রে মেশিনের কক্ষটি দীর্ঘ আট মাস ধরে তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। জনবল সংকটের কারণে এক্স-রে মেশিনটি অব্যবহৃত থাকায়, বিকল হতে বসেছে এর মূল্যবান যন্ত্রপাতি। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সেবা নিতে আসা রোগীরা।
বীরগঞ্জ সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ২৬ মে এক্স-রে মেশিনের দায়িত্বে থাকা একমাত্র রেডিও গ্রাফার বিপুল কুমার মন্ডল অবসরে যাওয়ায় পদটি শুন্য হয়। বর্তমানে রেডিও গ্রাফারের অভাবে বন্ধ রয়েছে এই সেবা। বিকল্প কোনো লোকবল না থাকায়, বর্তমানে এক্স-রে কক্ষটি তালাবদ্ধ রয়েছে। অন্যদিকে যক্ষ্ণা রোগ নিয়ন্ত্রণে একটি নতুন ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন বরাদ্দ দেওয়া হলেও, কারিগরি ক্রটির কারণে তাও ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না। মেরামত না করার কারণে মেশিনটি নষ্ট অবস্থায় পড়ে রয়েছে।
বর্তমানে এই সেবা কার্যক্রম বন্ধ থাকায়, বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে সাধারণ রোগীরা। এখানে এক্স-রে করতে ছোট ফ্লিমের জন্য ৭৫ টাকা এবং বড় ফ্লিমের জন্য ১২০ টাকা রোগীদের পরিশোধ করতে হতো। কিন্তু এই সেবা কার্যক্রম বন্ধ থাকায়, বাইরের বিভিন্ন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে থেকে উচ্চমূল্যে এক্স-রে করতে হচ্ছে। এতে তাদের ব্যয় হচ্ছে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা।
সেবা নিতে আসা বীরগঞ্জ পৌর শহরের হাসিনুর আলী জানান, রোগের চিকিৎসা ব্যয়ভার বহন করতে না পেরে, এখন বেশ সংকটে আছি। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। এরপর নিজের চিকিৎসা ব্যয়। সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক্স-রে সেবা চালু থাকলে অনেক টাকা বেঁচে যেতো। আমাদের মতো আর্থিক সংকটে থাকা রোগীদের জন্য এই অতিরিক্ত ব্যয় কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ভ্যানচালক জুয়েল হোসেন জানান, এখানে এক্স-রে করতে যে টাকা লাগে, বাইরে তার দ্বিগুনের বেশি টাকা লাগে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এই সেবা চালু থাকলে বেশ কিছু টাকা সাশ্রয় হতো। তা দিয়ে অন্ততপক্ষে কিছু ওষুধ কেনা যেতো। এই সেবা বন্ধ থাকায় বিপদে পড়েছেন আমাদের মতো স্বল্প আয়ের রোগীরা।
সেবা বঞ্চিত হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. আফরোজ সুলতানা লুনা বলেন, রেডিও গ্রাফারের পদটি শুন্য থাকায় সাময়িকভাবে এক্স-রে সেবা প্রদান বন্ধ রয়েছে। তবে আমরা পদটি শুন্যতার কথা উল্লেখ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে চাহিদা পত্র পাঠিয়েছি। আশা করছি, দ্রুততর সময়ে এই সমস্যার সমাধান হবে।