২৬শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১৩ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
Mirror Times BD

দরিদ্রবান্ধব চিকিৎসাসেবা

চতুর্থ আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলন ২০২৪-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনকালে দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য চিকিৎসা পরিষেবা নিশ্চিত করতে চিকিৎসক-নার্সসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। এও বলেছেন, গরিবদের চিকিৎসাসেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। এটা নিশ্চিত করতে হবে যে, তারা যেন কোনো অবস্থাতেই বঞ্চিত না হয় চিকিৎসা প্রাপ্তি থেকে। রাষ্ট্রপতি দেশের মেডিক্যাল শিক্ষা, চিকিৎসা ও গবেষণা কার্যক্রমে আরও গতিশীলতা আনয়নসহ চিকিৎসাসেবা ব্যবস্থাপনায় উন্নিতির প্রশংসাও করেছেন।

রাষ্ট্রপতি বলেছেন, দেশে জনসংখ্যা অনুপাতে চিকিৎসক ও নার্সের সংখ্যা অপ্রতুল। সে অবস্থায় সার্বিক স্বাস্থ্যব্যবস্থার উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতকেও এগিয়ে আসতে হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আদর্শ অনুযায়ী প্রতি ১ হাজার মানুষের স্বাস্থ্যসেবার জন্য একজন চিকিৎসক থাকা আবশ্যক। সে ক্ষেত্রে আমাদের দেশে গড়ে প্রতি ৫-৭ হাজার মানুষের জন্য একটি করে চিকিৎসকের পদ রয়েছে। এই দুর্বলতার সুযোগে রাজধানীসহ সারাদেশে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে অসংখ্য অবৈধ হাসপাতাল-ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টার ইত্যাদি।

সেসব স্থানে গরিব মানুষ চিকিৎসাসেবা নিতে গিয়ে আর্থিক ক্ষতিসহ প্রতারিত হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। মারাও যাচ্ছেন ভুয়া চিকিৎসকের কবলে পড়ে। রাষ্ট্রপতি অবৈধ এসব হাসপাতাল ও ক্লিনিকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি দেশের চিকিৎসাসেবা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে যেন কোনো  নেতিবাচক ধারণার সৃষ্টি না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন চিকিৎসক সম্প্রদায়ের প্রতি।
সম্প্রতি স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিজেও অবৈধ হাসপাতালের ভুক্তভোগী উল্লেখ করে গণমাধ্যমে বলেছেন, দেশের সব অবৈধ তথা লাইসেন্সবিহীন হাসপাতাল-ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টার অবিলম্বে বন্ধ করে দেওয়ার জন্য। বলেছেন, সংশ্লিষ্ট মালিক কর্তৃপক্ষকেই নিজ উদ্যোগে সেগুলো বন্ধ করতে হবে। তা না হলে সরকার তথা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। প্রয়োজনে আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

যাবতীয় দুর্নীতি-অনিয়মের বিরুদ্ধে গ্রহণ করা হবে জিরো টলারেন্স। সরকার তথা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উদ্যোগ ও প্রচেষ্টা সত্ত্বেও বাস্তবে দেখা যাচ্ছে যে, দেশে অবৈধ হাসপাতাল ও ক্লিনিকের দৌরাত্ম্য-আধিপত্য কমানো যাচ্ছে না কিছুতেই। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে সারাদেশে অবৈধ বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক-ব্লাড ব্যাংক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর বিরুদ্ধে তৃতীয় দফায় অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য, যা ইতিবাচক অবশ্যই।

পরিসংখ্যানে জানা যায়, দেশে নিবন্ধিত মোট বেসরকারি হাসপাতালের সংখ্যা ১৩ হাজার ৬১১টি। লাইসেন্স নবায়নের জন্য আবেদন করেছে ২২ হাজার ৪২৭টি। নতুন হাসপাতাল তৈরির আবেদনের সংখ্যা ১৮ হাজার ৬২৫টি। এর বাইরেও সারাদেশে ছড়িয়ে রয়েছে কয়েক হাজার হাসপাতাল ও ক্লিনিক- যার সংখ্যা হতে পারে অর্ধ লক্ষাধিক।

চিকিৎসক-নার্স-টেকনোলজিস্ট তো দূরের কথা, ভুয়া ডিগ্রির লোকজন দিয়ে এসব অবাধে চলছে প্রশাসনের নাকের ডগায়। সম্প্রতি দেশব্যাপী অভিযান চালিয়ে ৫৩৮টি অবৈধ বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এরপরও এগুলোর দৌরাত্ম্য বন্ধ করা যায়নি। এসবের সর্বাত্মক প্রতিরোধে অবিলম্বে আলাদা একটি অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা করাসহ গাইডলাইন তৈরি এবং কঠোর আইন প্রণয়ন অত্যাবশ্যক।

⠀শেয়ার করুন

loader-image
Dinājpur, BD
এপ্রি ২৬, ২০২৫
temperature icon 26°C
clear sky
Humidity 65 %
Pressure 1006 mb
Wind 7 mph
Wind Gust Wind Gust: 12 mph
Clouds Clouds: 1%
Visibility Visibility: 10 km
Sunrise Sunrise: 05:32
Sunset Sunset: 18:33

⠀আরও দেখুন

Scroll to Top