২৬শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১৩ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
Mirror Times BD

ক্যান্সার চিকিৎসায় গুরুত্ব দিন

বিশ্বব্যাপী ক্যান্সারে আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। বাড়ছে বাংলাদেশেও। শিশুরাও এই মারণব্যাধির হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না। বিশ্বে প্রতিবছর চার লাখ শিশু ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়।

বাংলাদেশে কান্সার নিয়ে ব্যাপক অনুসন্ধান বা স্ক্রিনিং কর্মসূচি না থাকায় যেমন রোগীদের সঠিক সংখ্যা জানা যায় না, তেমনি বেশির ভাগ রোগী রোগের শেষ পর্যায়ে চিকিৎসা নিতে আসে। এতে মৃত্যুর হারও হয় অনেক বেশি। প্রাপ্ত কিছু তথ্যের ভিত্তিতে ধারণা করা হয়, বাংলাদেশে প্রতিবছর আট হাজারের বেশি শিশু ক্যান্সারে আক্রান্ত হয় এবং তাদের ৭৮ শতাংশই আক্রান্ত হয় রক্তের ক্যান্সারে। অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, উন্নত বিশ্বে যেখানে ক্যান্সারে আক্রান্ত ৮০ শতাংশ শিশু চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে যায়, সেখানে বাংলাদেশে সুস্থ হওয়ার হার মাত্র ৩০ শতাংশ।
এর প্রধান কারণ অনেক দেরি করে চিকিৎসা নিতে আসা। চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রাথমিক অবস্থায় শনাক্ত করা গেলে এবং উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করা গেলে বাংলাদেশেও অন্তত ৭০ শতাংশ রোগীকে ভালো করা সম্ভব। এমন পরিস্থিতিতে শিশু ক্যান্সার সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করার লক্ষ্যে গত বুধবার সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও পালিত হয়েছে বিশ্ব শিশু ক্যান্সার দিবস। এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য ছিল ‘যথাসময়ে সঠিক চিকিৎসায় শিশু ক্যান্সার নিরাময় সম্ভব’।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশে ক্যান্সারে অধিক মৃত্যুর বহুবিধ কারণ রয়েছে। ক্যান্সারের চিকিৎসা এখনো মূলত ঢাকাকেন্দ্রিক। এ ছাড়া এই চিকিৎসা সময়সাপেক্ষ এবং অত্যন্ত ব্যয়বহুল। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের বহু রোগীর স্বজনদের পক্ষে রোগীকে দীর্ঘ সময় ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা করানো প্রায় অসম্ভব। গড়পড়তা একেকজন রোগীর চিকিৎসায় পাঁচ লাখ থেকে ছয় লাখ টাকা খরচ হয়, যা বেশির ভাগ রোগীর পক্ষে বহন করা সম্ভব হয় না।
রোগ শনাক্ত হয় দেরিতে বা প্রায় শেষ ধাপে, তখন চিকিৎকের করার কিছুই থাকে না। রোগ শনাক্তের ক্ষেত্রে পরিবারের অসচেতনতা প্রবল, রয়েছে চিকিৎকদের অবহেলা বা অমনোযোগিতা। রোগীর ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখা যায়, অনেকেই আগে একাধিক চিকিৎক দেখিয়েছে, কিন্তু তাঁরা রোগ ধরতে পারেননি কিংবা রোগ ধরার ক্ষেত্রে যথেষ্ট আন্তরিকতার অভাব ছিল। চিকিৎসার সুযোগ-সুবিধাও কম। রেডিওথেরাপি যন্ত্রটি ক্যান্সার চিকিৎসায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুযায়ী, প্রতি ১০ লাখ মানুষের জন্য একটি মেশিন দরকার। সে হিসাবে থাকা দরকার ১৭০টি যন্ত্র। সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে আছে মাত্র ২০টি মেশিন। এরও অর্ধেকের বেশি নষ্ট থাকে। পিইটি স্ক্যানসহ আরো কিছু যন্ত্রের অভাব রয়েছে। রয়েছে বিশেষজ্ঞ চিকিৎকের অভাব। ফলে রোগীদের উন্নত ও সহজলভ্য চিকিৎসা নিশ্চিত করা যায় না।ক্যান্সারের বহুবিধ কারণ রয়েছে। জিন বা বংশগতির কারণেও অনেকে আক্রান্ত হয়। পাশাপাশি পরিবেশদূষণ, শব্দদূষণ, খাদ্যে ভেজাল, অতিরিক্ত ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার ও ক্ষতিকর রশ্মি বা বিকিরণের সংস্পর্শে আসার কারণেও শিশুরা বেশি করে ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে। ক্যান্সারে আক্রান্ত শিশুদের ঘন ঘন জ্বর হওয়া, বিভিন্ন অঙ্গ থেকে রক্তপাত, শরীরে কালো কালো দাগ, হঠাৎ কোনো অঙ্গ ফুলে যাওয়া, পেটে চাকা হওয়া, খিঁচুনি, হাঁটতে না পারাসহ নানা রকম লক্ষণ দেখা যায়। মানুষ যাতে এসব লক্ষণ দেখে শিশুদের ক্যান্সার সম্পর্কে সচেতন হতে পারে সে জন্য ব্যাপক কর্মসূচি থাকা প্রয়োজন। জাতীয় ভিত্তিতে রোগ অনুসন্ধান কার্যক্রম বা স্ক্রিনিং কর্মসূচি পরিচালনা অত্যন্ত জরুরি। পাশাপাশি চিকিৎসার সুযোগ সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে হবে।

⠀শেয়ার করুন

loader-image
Dinājpur, BD
এপ্রি ২৬, ২০২৫
temperature icon 29°C
clear sky
Humidity 65 %
Pressure 1007 mb
Wind 8 mph
Wind Gust Wind Gust: 11 mph
Clouds Clouds: 0%
Visibility Visibility: 10 km
Sunrise Sunrise: 05:32
Sunset Sunset: 18:33

⠀আরও দেখুন

Scroll to Top