২৬শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১৩ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
Mirror Times BD

অসাধু রিফাইনারি

পবিত্র রমজানে সর্বস্তরের মানুষের কথা বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আমদানিনির্ভর কয়েকটি নিত্যপণ্যের শুল্ক ও ভ্যাট কমিয়ে দেয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। পণ্যগুলো হলো- সয়াবিন তেল, খেজুর, চিনি ও চাল। অবশ্য চালের অভ্যন্তরীণ বাজার স্থিতিশীল রাখতেই প্রধানত এর আমদানি শুল্ক কমানো হয়েছে। আপাতত চাল আমদানিতে ব্যবসায়ীদের প্রবল অনাগ্রহ রয়েছে।

অন্যদিকে পণ্যমূল্য স্থিতিশীল রাখার জন্য বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বিভিন্ন সময়ে বৈঠক করছেন আমদানিকারক পাইকারি-খুচরা ব্যবসায়ী, রিফাইনারি তথা পরিশোধনকারী, সর্বোপরি ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে। প্রায় সর্বত্রই পাওয়া গেছে আশা ও আশ্বাসের বাণী। তবে বাস্তবে বাজারে এর প্রতিফলন তেমন দেখা যায় না বললেই চলে। যেমন- পবিত্র শবে বরাতের আগে চিনির দাম বেড়েছে কোনো কারণ ছাড়াই।

সরকারের সঙ্গে বৈঠকের পর তেল আমদানিকারক ও রিফাইনারির মালিকরা আশ্বস্ত করেছিলেন ভ্যাট ও শুল্ক হ্রাসের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রতিলিটার ভোজ্যতেলের দাম ১০টাকা কমানো হবে। যা কার্যকর হবে মার্চের ১ তারিখ থেকে। তবে নতুন দাম কার্যকর হয়নি কোথাও- না পাইকারি বাজারে না খুচরা বাজারে। মুদিপণ্য ব্যবসায়ীদের দাবি, নতুন দামের বোতলজাত সয়াবিন তেল এখনো আসেনি বাজারে এবং কবে আসবে তাও বলতে পারছেন না তারা।

সে অবস্থায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ভোজ্যতেল আমদানিকারণ ও পরিশোধনকারী ৭টি মিলে সরেজমিন অভিযান চালানো হয়। তাতে দেখা যায়, আগের দামেই বোতলজাত করা হচ্ছে সয়াবিন তেল। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মহাপরিচালকের বক্তব্য সবিশেষ প্রণিধানযোগ্য। তিনি বলেছেন, তেলের নতুন দাম কার্যকরে ব্যবসায়ীদের মধ্যে তীব্র অনীহা পরিলক্ষিত হয়েছে।

১০দিন সময়  পেলেও তারা নতুন দামের লেভেল কোনো বোতলে লাগাননি, যা প্রকারান্তরে প্রতারণার শামিল। এই সুযোগে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। দুঃখজনক হলো, দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে তারা সবার আগে ছোটেন। আর দাম কমানোর ক্ষেত্রে উল্টো পথে। ব্যবসায়ীদের এহেন দ্বিমুখী আচরণ কাম্য নয়। এসব অসাধু ব্যবসায়ীকে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী শাস্তির আওতায় আনতে হবে। শুধু আর্থিক জরিমানা করে কিছু হবে না।

কেন তেল নিয়ে এই তেলেসমাতি হয়েছে, তাও স্পষ্ট নয়। এর জন্য সাধারণ মানুষকে জিম্মি করা কি খুব প্রয়োজন? অনেকদিন ধরেই তেলের বাজার নিয়ে হুজ্জুতি চলছে। ব্যবসায়ীরা দফায় দফায় বাড়াচ্ছেন তেলের দাম। এরপরও তেলের বাজারে স্থিতি নেই। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সময়েও দেশের অনেক এলাকায় তেল পাওয়া যায়নি। ভ্যাট ও শুল্ক প্রত্যাহারের পরও তেল নিয়ে শুরু হয়েছে তেলেসমাতি। রোজা ও ঈদ সামনে রেখে ব্যবসায়ীদের এই কারসাজিতে ভোগান্তি হয় ভোক্তাদের।

শেষ পর্যন্ত সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ বাধ্য হয় ব্যবসায়ীদের দাম বৃদ্ধি মেনে নিতে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দামও কমেছে। তথ্য অনুযায়ী আমাদের দেশে এখনো দুই মাস চলার মতো তেল মজুত রয়েছে।  রোজার আগে তেলের দাম না কমিয়ে কেন বাড়ানো হচ্ছে, তার কোনো সদুত্তর মেলে না। মানুষকে জিম্মি করে আর কতদিন ব্যবসায়ীরা এভাবে অর্থ হাতিয়ে নেবেন- এই প্রশ্ন দেশের সকল মানুষের।

⠀শেয়ার করুন

loader-image
Dinājpur, BD
এপ্রি ২৬, ২০২৫
temperature icon 29°C
clear sky
Humidity 65 %
Pressure 1007 mb
Wind 8 mph
Wind Gust Wind Gust: 11 mph
Clouds Clouds: 0%
Visibility Visibility: 10 km
Sunrise Sunrise: 05:32
Sunset Sunset: 18:33

⠀আরও দেখুন

Scroll to Top