চিরিরবন্দর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি : সরকারি নীতিমালা উপেক্ষা করে দিনাজপুর চিরিরবন্দর উপজেলায় একজন শিক্ষক চাকরি করছেন এমপিওভুক্ত দুই বিদ্যালয়ে। প্রায় ১০ বছর এভাবে চলার পরও বিষয়টি নজরে আসেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। নিয়ম লঙ্ঘন করা ওই শিক্ষক এমপিওভুক্ত দুই বিদ্যালয়ের একটিতে বাংলার সহকারী শিক্ষক এবং অন্যটিতে প্রধান শিক্ষক হিসেবে চাকরি করছেন। ওই শিক্ষকের নাম আব্দুর রাজ্জাক। তিনি চিরিরবন্দর উপজেলার জোত সাতনালা গ্রামের বাসিন্দা।
জানা গেছে, আব্দুর রাজ্জাক ২০১৪ সাল থেকে উপজেলার ফতেজংপুর ইউনিয়নের হাসিমপুর মোল্লাপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসাবে কর্মরত রয়েছেন। ওই প্রতিষ্ঠান থেকে এমপিওভুক্ত শিক্ষক হিসাবে সরকারি বেতনভাতাও নিয়মিত পাচ্ছেন। এছাড়া একই উপজেলার উত্তর সাতনালা নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়েরও তিনি প্রধান শিক্ষক। ২০২২ সালে এমপিওভুক্ত হয় এই বিদ্যালয়টি। প্রতিষ্ঠাকাল থেকে এই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে আছেন তিনি।
উত্তর সাতনালা নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সভাপতি ও আব্দুর রাজ্জাকের বড় ভাই আব্দুল মান্নান বলেন, তার ভাই দুই বিদ্যালয়ে চাকরি করে এ কথা সত্য। তবে সে আমাদের স্কুল থেকে বেতন-ভাতা নেয় না। প্রধান শিক্ষক হিসাব যখন সে এ স্কুলে যোগদান করে, তখন এ স্কুলের বেতন হয়নি। পরে অন্য একটি স্কুলে যোগদান করে। এখন সে দুই জায়গায় চাকরি করছে। সকালে আমাদের স্কুলে দায়িত্ব পালন করে, দুপুরে চলে যায় হাসিমপুর স্কুলে। আমি তাকে চাকরি ছাড়তে বলি না, কারণ সে শুরু থেকে এ স্কুল দেখাশোনা করছে।
উত্তর সাতনালা নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একজন সহকারী শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, যে কোনো বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হতে হলে এক প্রতিষ্ঠানে ১০ বছর চাকরি করতে হয়। আমাদের বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক যেখানে চাকরি করেন, সেখানে চাকরির বয়স ১০ বছর না হওয়ায় বিল হবে না। তাই ওই স্কুলে চাকরি ছাড়ছেন না তিনি। স্কুলের সভাপতি প্রধান শিক্ষকের আপন বড় ভাই হওয়ায় এ স্কুলে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ করে রাখছেন।
হাসিমপুর মোল্লা পাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক খলিলুর রহমান বলেন, এই স্কুলে আব্দুর রাজ্জাক সহকারী শিক্ষক (বাংলা) হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। উনি ১০টায় হাজিরা দেন এবং ৪টা পর্যন্ত বিদ্যালয়ে অবস্থান করেন। তিনি বাড়ির কাছে একটা প্রতিষ্ঠান চলমান রাখছেন। সম্প্রতি সেটি এমপিওভুক্ত হয়েছে। তিনি সেখানে কর্মরত আছেন কিনা এটা আমার জানা নেই। এ বিষয়ে শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তিনি কোন কিছু বলতে অস্বীকৃতি জানান।
চিরিরবন্দর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ফজলে এলাহী বলেন, হাসিমপুর মোল্লাপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে আব্দুর রাজ্জাক চাকরি করেন। তবে তিনি উত্তর সাতনালা নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালেয়র প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব আছেন, তা আমার জানা ছিল না। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।