১৬ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২রা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Mirror Times BD

ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাকে আপাতত যুক্ত হতে চায় না বিএনপি

মিরর ডেস্ক : ভারতীয় পণ্য বয়কটের যে কথা বলা হচ্ছে তাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আন্দোলন ও সাধারণ মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ বলে মনে করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির বেশির ভাগ শীর্ষ নেতা। দলটির নেতারা মনে করেন, নানা কারণে সাধারণ মানুষ ভারতের আচরণে ক্ষুব্ধ। তারা সেই ক্ষোভ থেকে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়েছে। তবে এটি কোনো সংগঠিত আন্দোলন নয়। বরং বলা যায়, এটি একটি সামাজিক আন্দোলন। বারবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকা এবং ভবিষ্যতেও ক্ষমতাপ্রত্যাশী দল হিসেবে বিএনপিকে এই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হওয়া ঠিক হবে না।

মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) গুলশানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাকে দলের যুক্ত হওয়া ঠিক হবে কি না, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হলে দলটির শীর্ষ কয়েকজন নেতা এই মনোভাব ব্যক্ত করেন। বৈঠকে উপস্থিত বিএনপির এক নেতা বলেন, অল্প কিছু সময় এ বিয়য়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। গতকালের বৈঠকে মূলত উপজেলা নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ করা উচিত হবে কি হবে না, তা নিয়েই মূলত আলোচনা হয়েছে। এই ইস্যুতে আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত না হলেও দলের মনোভাব হচ্ছে এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার আগের সিদ্ধান্তে অটল থাকা। এই নেতা বলেন, আগামী বৈঠকে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দলের নেতাকর্মীদের জানানো হবে।

বৈঠকে উপস্থিত একটি সূত্র জানিয়েছে, ভারতীয় পণ্য বর্জন নিয়ে মূলত আলোচনার সূত্রপাত দলের জ্যৈষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদের একটি কর্মকাণ্ড নিয়ে। বৈঠকে এক নেতা প্রশ্ন করেন রিজভীর ভারতীয় পণ্য বর্জনের যে ঘোষণা, তা কি দলীয় সিদ্ধান্তে। আর সিদ্ধান্তে হলে সেটা কোথায় হয়েছে। তবে বৈঠকে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জানান, এ ব্যক্তিগত। দলীয় কোনো সিদ্ধান্ত নয়। এরপর তিনজন নেতা কেন এই ধরনের আন্দোলনে দল হিসেবে বিএনপির যুক্ত হওয়া উচিত হবে না, সে বিষয়ে কথা বলেন। তারা বলেন, বিএনপি অনেক বার রাষ্ট্র ক্ষমতায় থেকেছে। ভবিষ্যতেও দলীয় রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসবে। ভারতের ওপর সাধারণ মানুষের ক্ষোভের সঙ্গে দলীয় ভাবে জড়ানোর কোনো কারণ থাকতে পারে না। কেননা আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে তখন প্রতিবেশী দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক কীভাবে নিরূপণ হবে।

প্রসঙ্গত, বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ২০ মার্চ সংবাদ সম্মেলন করে ভারতীয় পণ্য বর্জনের আন্দোলনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন। এরপর তিনি নয়াপল্টনের বিএনপির কার্যালয়ের সামনে নিজের ব্যবহার করা ভারতীয় চাদর ছুড়ে ফেলে দেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে থাকা নেতা-কর্মীরা সেখানে চাদরটি আগুন দিয়ে পোড়ান। এর তিন দিন পর রিজভী আরেক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, ভারতীয় পণ্য বর্জনে তারা যে সংহতি জানিয়েছেন, তা বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে, গণতন্ত্রের পক্ষে। এ দেশের মানুষ দীর্ঘদিনের বঞ্চনা, অপমান, লাঞ্ছনা, ক্ষোভ থেকে এটি করছেন।

এ বিষয়ে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘রিজভী তো বলেই দিয়েছেন, এটা (ভারতীয় পণ্য বর্জনে সংহিত প্রকাশ) তাঁর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলেন, এ নিয়ে আর আলোচনা খুব বেশি এগোয়নি। পরবর্তী বৈঠকে হয়তো বিষয়টি আবারও আলোচনায় উঠতে পারে। তবে এই সদস্য বলেন, বৈঠকে এটি নিশ্চিত করেই বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের নির্বাচনের পর দেশে ভারতবিরোধীতা ব্যাপক বেড়েছে। ভারতীয় পণ্য বর্জনের যে ডাক সেটা সেই বিরোধিতার একটি প্রকাশ মাত্র।

জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, গতকালের বৈঠকে অনেক বিষয়েই আলোচনা হয়েছে। তবে কোনো বিষয়ে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আগামী বৈঠক পর্যন্ত বেশ কিছু ইস্যুতে দলের অবস্থান চূড়ান্ত করা হবে।

ভারতীয় পণ্য বর্জনের আহ্বানে বিএনপি যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা কতটা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিএনপির একটি বড় রাজনৈতিক দল। দল হিসেবে তার করণীয় নির্ধারণ হবে। আর এখন সাধারণ মানুষের ক্ষোভ থেকে ভারতীয় পণ্য বর্জনের আহ্বান একটি সামাজিক আন্দোলনে পরিণত হয়েছে।

⠀শেয়ার করুন

loader-image
Dinājpur, BD
মার্চ ১৬, ২০২৫
temperature icon 38°C
clear sky
Humidity 12 %
Pressure 1003 mb
Wind 20 mph
Wind Gust Wind Gust: 35 mph
Clouds Clouds: 1%
Visibility Visibility: 10 km
Sunrise Sunrise: 06:13
Sunset Sunset: 18:14

⠀আরও দেখুন

Scroll to Top