মিরর ডেস্ক : ‘মাঘ মাস, শুক্ল পক্ষে, বসন্ত পঞ্চমী; বিদ্যাদেবী বীণাপানি, তোমারে প্রণমি; হংসযুক্ত রথ পরে, চড়িয়া বিমানে; আবির্ভূতা হন দেবী, এই ধরাধামে।’ কবির এই চার পঙতিতেই ফুটে উঠেছে দেবী সরস্বতীর পূর্ণ বিবরণ।
আজ সোমবার সনাতন সম্প্রদায়ের মানুষ আরাধনা করবেন দেবী সরস্বতীর। শাস্ত্র অনুযায়ী, মাঘ মাসের শুক্ল পক্ষের পঞ্চমী তিথিতে বিদ্যার ও ললিতকলার অধিষ্ঠাত্রী দেবী সরস্বতীকে মর্তে আবাহন করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। তাই একে শ্রীপঞ্চমী বা বসন্ত পঞ্চমীও বলা হয়।
হিন্দুধর্ম বিশ্বাসে সরস্বতী বিদ্যা, বাণী আর সুরের অধিষ্ঠাত্রী দেবী। মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে শুভ্র রাজহংসে চেপে দেবী সরস্বতী আসেন জগতে। গতকাল রবিবার মধ্যরাতে প্রতিমা স্থাপন করে পূজার আনুষ্ঠানিকতা সূচিত হয়েছে। চলবে আজ সেমাবার রাত অবধি। সনাতন ধর্মীয় রীতিতে প্রত্যুষে দেবীকে দুধ, মধু, দই, ঘি, কপূর, চন্দন দিয়ে স্নান করানো হবে। এরপর চরণামৃত নেবেন ভক্তরা।
আজ সকাল ৯টা দেশব্যাপী শুরু হয় বাণী অর্চনা। পুরোহিতরা ‘সরস্বতী মহাভাগে বিদ্যে কমল লোচনে/বিশ্বরূপে বিশালাক্ষী বিদ্যংদেহী নমোস্তুতে’ এ মন্ত্রে বিদ্যার দেবী সরস্বতীর আরাধনা করেন, পূজার আচার পালন করেন। এরপর ভক্তরা পুষ্পাঞ্জলি দেন। তাদের বিশ্বাস, দেবী খুশি হলে বিদ্যা ও বুদ্ধি অর্জিত হবে।
আজ শীতল ষষ্ঠীতে সরস্বতীপূজা আজ শিশুদের হাতেখড়ি, ব্রাহ্মণভোজন ও পিতৃতর্পণের প্রথা প্রচলিত আছে। সরস্বতী বৈদিক দেবী হলেও সরস্বতী পূজা বর্তমান রূপটি আধুনিককালে প্রচলিত হয়েছে। প্রাচীন কালে তান্ত্রিক সাধকরা সরস্বতী-সদৃশ দেবী বাগেশ্বরীর পূজা করতেন।
ঊনবিংশ শতাব্দীতে পাঠশালায় প্রতি মাসের শুক্লা পঞ্চমী তিথিতে ধোয়া চৌকির ওপর তালপাতার তাড়ি ও দোয়াতকলম রেখে পূজা করার প্রথা ছিল। শ্রীপঞ্চমী তিথিতে ছাত্ররা বাড়িতে বাংলা বা সংস্কৃত গ্রন্থ, শ্লেট, দোয়াত ও কলমে সরস্বতী পূজা করত।
সরস্বতী পূজা উপলক্ষ্যে হিন্দু সম্প্রদায় বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা আজ বাণী অর্চনাসহ নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।