সাহাবি ফিরে গিয়ে আগের মত নামাজ আদায় করে আবার নবিজিকে (সা.) সালাম করলেন। নবিজি আবার বললেন, ফিরে গিয়ে নামাজ আদায় করো, তুমি নামাজ আদায় করোনি।
এভাবে তিনবার তিনি তাকে ফিরে গিয়ে নামাজ আদায় করতে বললেন।
সাহাবি বললেন, সেই মহান সত্তার শপথ! যিনি আপনাকে সত্যসহ পাঠিয়েছেন, আমি তো এর চেয়ে সুন্দর করে নামাজ আদায় করতে পারি না। আপনি আমাকে শিখিয়ে দিন।
নবিজি বললেন, যখন তুমি নামাজের জন্য দাঁড়াবে, তখন তাকবির বলবে। তারপর কুরআন থেকে কিছু আয়াত পড়বে যা তোমার জন্য সহজ হয়। তারপর রুকুতে যাবে এবং ধীরস্থিরভাবে রুকু আদায় করবে। তারপর রুকু’ থেকে উঠে সোজা হয়ে দাঁড়াবে। তারপর ধীরস্থিরভাবে সিজদা করবে। এরপর সিজদা থেকে উঠে স্থিরভাবে বসবে এবং পুনরায় সিজদায় গিয়ে ধীরস্থিরভাবে সিজদা করবে। এভাবে পুরো নামাজ আদায় করবে। (সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম)
১. ধীরস্থিরতার সঙ্গে নামাজ আদায় করা জরুরি। নামাজে তাড়াহুড়া করলে, কোনো রকম রুকু ও সিজদা আদায় করলে নামাজের সওয়াব পাওয়া যায় না। হাদিসে বর্ণিত সাহাবি তাড়াহুড়া করে নামাজ পড়েছিলেন। তাই নবিজি তাকে বলেছেন তার নামাজ হয়নি, তিনি যেন আবার গিয়ে নামাজ পড়েন।
২. রুকু ও সিজদাসহ নামাজের প্রতিটি রোকনে গিয়ে স্থির হতে হবে, ওই রোকনের কেরাত বা তাসবিহগুলো পাঠ করতে হবে। প্রতিটি রোকনে গিয়ে স্থির হওয়া পর্যন্ত অবস্থান করা জরুরি। কেউ যদি তাড়াহুড়া করতে গিয়ে নামাজের রোকনগুলো যথাযথভাবে আদায় না করে, তাহলে তার নামাজ বাতিল হয়ে যায় এবং পুনরায় আদায় করতে হয়। সাহু সিজদা এ রকম ভুলের মাশুল হয় না। এ কারণে নবিজি (সা.) ওই সাহাবিকে সাহু সিজদা দেওয়ার নির্দেশ না দিয়ে আবার নামাজ আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন।
৩. কোনো মুসলমানকে নামাজে ভুল করতে দেখলে অপর মুসলমানের কর্তব্য তার ভুল ধরিয়ে দেওয়া। তাকে তার ভুলের ওপর ছেড়ে দেওয়ার সমীচীন নয়। কেউ যদি নামাজের ওয়াজিব আমলে ভুল করে, তাহলে ওই ভুল ধরিয়ে দেওয়া ওয়াজিব এবং কেউ মুস্তাহাব আমলে ভুল করলে ওই ভুল ধরিয়ে দেওয়া মুস্তাহাব গণ্য হবে। রাসুল (সা.) নামাজে কাউকে ভুল করতে দেখলে ভুল ধরিয়ে দিতেন। সাহাবি ও তাবেঈরাও কাউকে নামাজে ভুল করতে দেখলে ভুল ধরিয়ে দিতেন।