২৬শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১৩ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
Mirror Times BD

ইসলামে ধর্ষণের ভয়াবহতা ও শাস্তির বিধান

মিরর ডেস্ক : ইসলাম শান্তি, ন্যায়বিচার ও মানবাধিকারের ধর্ম। মানুষের সম্ভ্রম, মর্যাদা ও নিরাপত্তা রক্ষার বিষয়ে ইসলাম অত্যন্ত কঠোর। ধর্ষণ শুধু ব্যক্তি নয়, পুরো সমাজের জন্য ভয়াবহ অপরাধ। ইসলামের দৃষ্টিতে ধর্ষণ এক ধরনের ব্যভিচার ও সামাজিক অশান্তির কারণ, যা কঠোর শাস্তি ছাড়া দমন করা সম্ভব নয়। তাই কোরআন ও হাদিসে ধর্ষণের জন্য কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে, যাতে সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এ ধরনের জঘন্য অপরাধ থেকে মানুষ বিরত থাকে।

ধর্ষণ ও ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি
ধর্ষণ ইসলামে ব্যভিচারের চেয়েও গুরুতর অপরাধ হিসেবে বিবেচিত। কারণ এটি শুধু ব্যভিচার নয়, বরং এতে একজন নিরপরাধ নারীর প্রতি অবিচার, সহিংসতা ও নিপীড়ন ঘটে। ধর্ষণের ফলে শুধু ভুক্তভোগী নারীই নয়, বরং পুরো পরিবার ও সমাজের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। তাই ইসলাম এ ধরনের ঘৃণ্য অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোরতম অবস্থান গ্রহণ করেছে।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা ব্যভিচারের কাছেও যেও না। এটি অশ্লীল কাজ ও নিকৃষ্ট পথ।’ (সূরা আল-ইসরা: ৩২)

এই আয়াত থেকে স্পষ্ট যে, ইসলাম কেবল ধর্ষণ নয়, ব্যভিচারের সামান্য ইঙ্গিত বা সুযোগকেও কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করেছে।

ধর্ষণের জন্য কোরআনের শাস্তির বিধান

পবিত্র কোরআনে ধর্ষণকারীদের জন্য কঠোর শাস্তির কথা বলা হয়েছে। ধর্ষণ মূলত এক ধরনের ফিতনা ও সমাজে অশান্তি সৃষ্টির মাধ্যম, যা ইসলামে বড় অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়।

আল্লাহ বলেন, ‘যারা পৃথিবীতে দুষ্কর্ম ও অশান্তি সৃষ্টি করতে চায়, তাদের শাস্তি হলো হত্যা, শূলবিদ্ধকরণ, বিপরীত দিক থেকে হাত-পা কেটে দেওয়া অথবা দেশ থেকে নির্বাসিত করা।’ (সূরা আল-মায়েদা: ৩৩)

এ আয়াত অনুসারে, যারা সমাজে ভয়ংকর অপরাধ ঘটিয়ে মানুষের শান্তি বিনষ্ট করে, তাদের জন্য ইসলামে চারটি কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে—

১. মৃত্যুদণ্ড

২. শূলবিদ্ধকরণ (ক্রুশবিদ্ধ করা)

৩. বিপরীত দিক থেকে হাত ও পা কেটে দেওয়া

৪. দেশ থেকে নির্বাসিত করা

হাদিসের আলোকে ধর্ষকের শাস্তি

রাসুলুল্লাহ (সা.) ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধের জন্য কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। একবার এক ব্যক্তি এক নারীর ওপর জোরপূর্বক অত্যাচার করেছিল, তখন রাসুল (সা.) নির্দেশ দিয়েছিলেন যে, ধর্ষককে হত্যা করতে হবে। (তিরমিজি, ১৪৫৪)

এ ছাড়াও, ইসলামী শরিয়াহ মতে ধর্ষণের শাস্তি ব্যভিচারীদের মতোই কঠোর। যদি ধর্ষক বিবাহিত হয়, তবে তার শাস্তি পাথর ছুড়ে মৃত্যুদণ্ড। আর যদি অবিবাহিত হয়, তবে তাকে ১০০ বেত্রাঘাত ও এক বছর নির্বাসনে পাঠানোর নির্দেশনা রয়েছে।

ইসলামী শাসনব্যবস্থায় ধর্ষণ প্রতিরোধ

ইসলামের শাস্তি ব্যবস্থা শুধু শাস্তি প্রদানের জন্যই নয়, এটি সমাজে শৃঙ্খলা বজায় রাখার অন্যতম উপায়। ধর্ষণের মতো অপরাধ প্রতিরোধে ইসলামে শুধু কঠোর শাস্তির ব্যবস্থাই রাখা হয়নি, বরং সমাজে এমন পরিবেশ গড়ে তুলতে বলা হয়েছে, যাতে কেউ এ ধরনের অপরাধ সংঘটিত করতে সাহস না পায়।

ইসলামের প্রধান প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হলো—

নারীর মর্যাদা ও অধিকার নিশ্চিত করা
পর্দার বিধান মেনে চলা
নারী ও পুরুষের মধ্যে সীমারেখা বজায় রাখা
অন্যায়ভাবে কাউকে কষ্ট না দেওয়া ও সম্মান রক্ষা করা
সঠিক বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা
ধর্ষণ ইসলাম মতে সবচেয়ে ঘৃণ্য অপরাধগুলোর একটি, যা সামাজিক অবক্ষয়ের কারণ। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে এ অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে, যাতে সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয় এবং অপরাধীদের মনে ভয় সৃষ্টি হয়। ইসলামের কঠোর আইন বাস্তবায়ন করা হলে ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ সমাজ থেকে দূর করা সম্ভব হবে।

⠀শেয়ার করুন

loader-image
Dinājpur, BD
এপ্রি ২৬, ২০২৫
temperature icon 29°C
clear sky
Humidity 65 %
Pressure 1007 mb
Wind 8 mph
Wind Gust Wind Gust: 11 mph
Clouds Clouds: 0%
Visibility Visibility: 10 km
Sunrise Sunrise: 05:32
Sunset Sunset: 18:33

⠀আরও দেখুন

Scroll to Top