ঢাকা : পুলিশের দুজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশি নাগরিকদের অতি সংবেদনশীল এবং ক্লাসিফায়েড তথ্য অনলাইনে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) ডাটাবেইজে প্রবেশ করে এসব তথ্য নিজেদের দখলে নিয়েছিলেন তারা।
দুই পুলিশ কর্মকর্তা হলেন—অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটের (এটিইউ) পুলিশ সুপার ফারহানা ইয়াসমিন এবং র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-৬ (র্যাব) এর সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) তারেক আমান বান্না।
প্রায় দেড় মাস আগে চিঠি দেওয়া হলেও সম্প্রতি বিষয়টি জানাজানি হয়। মূলত প্রযুক্তিবিষয়ক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম টেকক্রাঞ্চে এনটিএমসির পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ বাকেরের দেওয়া সাক্ষাৎকার থেকে বিষয়টি স্পষ্ট হয়।
বিষয়টি এনটিএমসির নজরে এলে সংস্থাটির পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ বাকের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন নিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব বরাবর একটি চিঠি দেন।
প্রযুক্তিবিষয়ক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম টেকক্রাঞ্চে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল বাকের বলেন, ‘বিডি সাইবার গ্যাং’ নামক টেলিগ্রাম চ্যানেলসহ একাধিক টেলিগ্রাম চ্যানেল, ফেসবুক গ্রুপ এবং হোয়াটস অ্যাপে সংগৃহীত তথ্য বিক্রি করা হয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তারা এসব গ্রুপের এডমিনদের তথ্য সরবরাহ করতেন। ইন্টারনেটে বিক্রির বিষয়টি সেসব অ্যাডমিনরা দেখভাল করতেন।
তবে ঠিক কত সংখ্যক নাগরিকের কী পরিমাণ তথ্য এভাবে অনলাইনে বিক্রি হয়েছে, সে বিষয়ে নিশ্চিত করতে পারেননি জেনারেল বাকের।
এদিকে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দেওয়া চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ২৫ মার্চ থেকে ২৫ এপ্রিলের মধ্যে বেশ কিছু তথ্য সংগ্রহ করেন এসপি ফারহানা এবং এএসপি তারেক। ২৫ এপ্রিল রাত ৯টা থেকে সাড়ে ৯টার মধ্যে ‘ডাটা ব্রিচ’র তথ্য জানতে পারে এনটিএমসি। লগ সার্ভার বিশ্লেষণ করে ফারহানা এবং তারেকের আইডি থেকে অস্বাভাবিক লগ-ইন দেখতে পায় এনটিএমসি।
অন্যদিকে এসপি ফারহানা ইয়াসমিন এবং এএসপি তারেক আমানকে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত হওয়ার বিষয়টি জানানো হয়েছে বলে টেকক্রাঞ্চকে জানিয়েছে এনটিএমসি পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল বারেক।
তবে এনটিএমসিকে দেওয়া পাল্টা চিঠিতে পুলিশের এটিইউ থেকে দাবি করা হয়, এসপি ফারহানা ইয়াসমিনের আইডি ব্যবহার করে সেসব তথ্য সংগ্রহ ও বিক্রি করেছেন দুই কনস্টেবল। তারা হলেন—সাইবার ক্রাইম উইং এর কনস্টেবল মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী এবং অপারেশন্স উইংয়ের খায়রুল ইসলাম। দুই কনস্টেবলকে বরখাস্ত করা হয়েছে।