ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌর শহরের সড়ক বাজারে জনসম্মুখে তিন মুসলিম নারীর মাথার চুল জোরপূর্বক কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ব্যবসায়ী সুমন দাসের বিরুদ্ধে। রবিবার হাজী নূর মার্কেটের নিচে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগ রয়েছে, চুরির অপবাদ দিয়ে সুমন দাস ও তার সহযোগী মো. রাব্বি বোরখা পরিহিত নারীদের মাথার কাপড় খোলে চুল কাটেন সুমন দাস। শুধু তাই নয় নারীদের সঙ্গে থাকা একটি শিশুসহ অন্য দুই নারীকে প্লাস্টিকের পাইপ ও রড দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। এসময় উপস্থিত স্থানীয়রা তখন সুমন দাস কে মারধর ও চুল কাটতে বাধা প্রদান করলে উল্টো হুমকি দেন তাদেরকে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জোরপূর্বক নারীর চুল কাটা ও বেধড়ক মারদুরের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। যা তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয় পুরো আখাউড়ায়।
জানা যায়, সড়ক বাজারের ব্যবসায়ী মেসার্স এস.এম ইলেকট্রিক কর্নারের মালিক সুমন দাস ও মা টেলিকমের মালিক মো. রাব্বি অভিযুক্ত নারীদের চুরির দায়ে অপপ্রচার চালিয়ে জোরপূর্বক তাদের বোরখা খুলে চুল কাটেন। ভাইরাল ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, এক নারীর চুল কেঁচি দিয়ে কাটছে সুমন দাস এ সময় অন্য দুই নারীকে আটকে রাখা হচ্ছে। এ ঘটনায় স্থানীয়রা পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন।
আখাউড়া থানার উপ-পরিদর্শক কামরুল হাসান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তবে এখনও মূল অভিযুক্ত সুমন দাসকে গ্রেপ্তার করতে না পারায় বিক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয়রা। সোমবার সকালে আখাউড়া থানার সামনে জমায়েত হয়ে তারা দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি তোলে।
এ ঘটনায় স্থানীয় সাধারণ মানুষের মধ্যে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ পেয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা নারীর সম্মানহানির ঘটনায় কঠোর বিচার দাবি করছেন। আখাউড়া থানার ফেসবুক পেজে প্রকাশিত বিবৃতিতে ওসি ছমিউদ্দিন সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি বজায় রাখতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ভিডিও সাক্ষ্যপ্রমাণ সংগ্রহ ও চিহ্নিত অভিযুক্তদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তারি অভিযান ত্বরান্বিত করা হবে বলে জানান তারা।
আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ছমিউদ্দিন বলেন, অপরাধের সঙ্গে জড়িত কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। পুলিশি অভিযান চলমান রয়েছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের চক্রান্ত রুখতে সবাইকে সচেতন থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, ভিডিও ফুটেজ ও সাক্ষ্যপ্রমাণ বিশ্লেষণ করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।