মিরর ডেস্ক : ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজীমকে কলকাতার নিউটাউনের সঞ্জীবা গার্ডেনের ফ্লাটটিতে হত্যার ছবি পাওয়া গেছে। একইসঙ্গে ফ্ল্যাটটিতে ঠিক কী ঘটেছিল, তা নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে চুয়াডাঙ্গার দর্শনার গেদে সীমান্ত দিয়ে গত ১২ মে ভারতে যান সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার। তিনি পশ্চিমবঙ্গে বরাহনগর থানার মণ্ডলপাড়া লেনে গোপাল বিশ্বাস নামে এক বন্ধুর বাড়িতে ওঠেন। পরদিন চিকিৎসক দেখানোর কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। এর পর থেকেই রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হন তিনি।
২২ মে হঠাৎ খবর ছড়ায়, কলকাতার পার্শ্ববর্তী নিউ টাউন এলাকায় সঞ্জীবা গার্ডেনস নামের একটি আবাসিক ভবনের বিইউ ৫৬ নম্বর রুমে আনোয়ারুল আজীম খুন হয়েছেন। ঘরের ভেতর পাওয়া যায় রক্তের ছাপ।
ডিবি জানিয়েছে, ১৩ মে সেখানে তাকে হত্যা করে মরদেহ টুকরো টুকরো করে গুম করা হয়। এর পর থেকে একে একে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত অনেককেই গ্রেফতার করা হয়। হত্যাকাণ্ড তদন্তে গত ২৬ মে কলকাতায় যায় ডিবি পুলিশের একটি দল।
গ্রেফতার হওয়া জিহাদকে সঙ্গে নিয়ে তদন্তকারীরা সঞ্জীবা গার্ডেনসের সেই ফ্লাটেও যান। এ সময় আনার হত্যায় কে কীভাবে জড়িত ছিল, কার কী ভূমিকা ছিল, হত্যার পর কীভাবে আনারের দেহ টুকরো টুকরো করে বিভিন্ন স্থানে ফেলা হয় সব জানান জিহাদ। তার দেওয়া বর্ণনার একটি ভিডিও এরই মধ্যে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
ঐ ফ্ল্যাটে আনারকে হত্যার পর একটি চেয়ারে তার দুই হাত দড়ি দিয়ে বাঁধা হয়। গামছা দিয়ে বাঁধা হয় গলা। সাদা কাপড় দিয়ে বাঁধা হয় মুখ এবং কালো কাপড় দিয়ে বাঁধা হয় মাথা।
কসাই জিহাদ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানিয়েছে, আনারকে হত্যা করার পর ঐ ফ্ল্যাটে একটি চেয়ারের সঙ্গে এভাবে বেঁধে রাখা হয়। এরপর সিদ্ধান্ত হয় টুকরো টুকরো করে মরদেহ কাটার। সেই সিদ্ধান্ত মোতাবেক মরদেহ থেকে মাংস আলাদা করে বাথরুমে ফেলে ফ্ল্যাশ করা হয়।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, অজ্ঞান করার রাসায়নিক ক্লোরোফর্ম দিয়ে অচেতন করে আনারকে বালিশ চাপা দিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। হত্যা করেই ক্ষ্যান্ত হয়নি খুনিরা। আনারকে চেয়ারে বসিয়ে তার হাত ও পা শক্ত করে বেঁধে রাখা হয়।
জিহাদের দেওয়া তথ্যে জানা যায়, ফ্ল্যাটের বাথরুমে টুকরো টুকরো করে আনারের দেহাংশ ফ্ল্যাশ করা হয়।
এর আগে ঐ ফ্ল্যাটের একটি রুমে আনারকে প্রথমে স্বাগত জানান শিলাস্তি রহমান। পরে সেখানে যান জিহাদ। তখন শিলাস্তিকে অন্য রুমে যেতে বলা হয়।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানান, আনারের মরদেহের কোনো টুকরো যেন কোনদিন না খুঁজে পাওয়া যায় সেজন্য সিয়াম এবং জিহাদকে ব্যাবহার করা হয়। তারা এমন পদ্ধতি ব্যবহার করেন যেন একজনের তথ্য অন্যের কাছে না যায়। কাটআউট পদ্ধতিতে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়।