ঢাকা : আরও ৯ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে। মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) এজাহারে নাম থাকা ৯ মামলায় গ্রেফতার দেখানোর বিষয়ে শুনানি শেষে এ আদেশ দেন আদালত। তবে মামলাগুলোতে জামিন শুনানির জন্য বুধবার (১০ জানুয়ারি) দিন ধার্য করেছেন বিচারক।
মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) দুপুরে মির্জা ফখরুলের উপস্থিতিতেই ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সুলতান সোহাগ উদ্দিনের আদালত এই আদেশ দেন। মির্জা ফখরুলের পক্ষের আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
আইনজীবীদের সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক ঘটনায় মির্জা ফখরুলের বিরুদ্ধে মোট ১১টি মামলা রয়েছে। এদের মধ্যে দুটি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। বাকি আরও ৯টি মামলায় আজ তাকে গ্রেফতার দেখানো হলো।
এদিন সকাল ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে কারা কর্তৃপক্ষ ঢাকার কেরানীগঞ্জ কারাগার থেকে মির্জা ফখরুলকে আদালতে হাজির করে। এরপর সংশ্লিষ্ট আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। বেলা ১টা ১৪ মিনিটের দিকে আদালতের এজলাসে ওঠানো হয়।
গ্রেফতার দেখানো ও জামিন শুনানিতে মির্জা ফখরুলের আইনজীবীরা বলেন, পাকিস্তান আমলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ আওয়ামী লীগের ৩ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। স্বাধীন দেশেও এমন বিএনপির হাজার হাজার মানুষকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম বহির্বিশ্বে ক্লিন ইমেজের নেতা হিসেবে দেখে। অথচ তার নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। স্বাধীন দেশে আমরা এমন কিছু প্রত্যাশা করি না।
তারা বলেন, ৯ মামলায় প্রত্যেকটিতে বলা হয়েছে, গত ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশে মির্জা ফখরুল নাকি নাশকতার উসকানি দিয়েছে। সারা বিশ্ব জানে বিএনপি ভোটের অধিকারের জন্য লড়াই করছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম যদি আপস করতেন, তাহলে ৭৬ বছর বয়সে এখানে আসতে হতো না। গ্রেফতারের পর তার ৫ কেজি ওজন কমে গেছে। তাকে গ্রেফতারের উদ্দেশ্য হলো যেন একতরফা ভোট করা যায়। তিনি হার্টের রোগী, মির্জা ফখরুলের জামিন দেন। অতীতে তিনি জামিন নিয়ে কোনও শর্ত ভঙ্গ করেননি। এবারও করবেন না।
শুনানিতে মির্জা ফখরুল বাংলাদেশের একজন জাতীয় নেতা উল্লেখ করে আইনজীবীরা বলেন, তিনি সাবেক মন্ত্রী ছিলেন। রাজনীতিবিদদের বাঁচতে দিন। অন্য আসামিরা যেমন জামিন পাচ্ছে। তিনি অসুস্থ ব্যক্তি, বয়স্ক ব্যক্তি। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ১০০টির মতো মামলা রয়েছে। তিনি নিয়মিত আদালতে আসেন মামলার হাজিরার দেন। তাকে জামিন দিলে তিনি আদালতের শর্ত মেনে হাজিরা দিবেন।
গত ৩১ ডিসেম্বর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রেজাউল করিম চৌধুরীর আদালত গ্রেফতার দেখানোসহ জামিন শুনানির জন্য এই তারিখ ধার্য করেছিলেন।
জানা যায়, গত ২৮ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মির্জা ফখরুলের গুলশানের নিজ বাসা থেকে তাকে আটক করেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। এরপর তাকে হত্যা ও গাড়ি পোড়ানোর ঘটনায় পল্টন থানার মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
গত ২৯ অক্টোবর তাকে আদালতে হাজির করা হলে ঢাকার মেট্রোপলিটন মাজিস্ট্রেট আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর থেকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কারাগারে রয়েছে।