মিরর ডেস্ক : যথাযথ মর্যাদায় শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) ভারতজুড়ে উদ্যাপিত হচ্ছে ৭৫তম প্রজাতন্ত্র দিবস। এদিন দেশটির রাজধানী নয়া দিল্লির বিজয়চকে সেনাবাহিনীর কুচকাওয়াজের অভিবাদন গ্রহণ করেন ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু।
এবছর ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবস উদ্যাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। ম্যাক্রোঁ হলেন ষষ্ঠ ফরাসি নেতা যিনি প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
শুক্রবার সকাল ১০টায় দিল্লিতে জাতীয় স্মৃতিসৌধে (ওয়ার মেমোরিয়াল) শহীদ ভারতীয় সেনা সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী। সঙ্গে ছিলেন ছিলেন তিন বাহিনীর প্রধানরা। এরপর সেখান থেকে দিল্লীর কর্তব্য পথে (দিল্লির রাজপথের নাম পরিবর্তন করে কর্তব্য পথ রাখা হয়) আসেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর কিছুক্ষণ পরেই সেখানে পৌঁছান উপ-রাষ্ট্রপতি। এরপর প্রধান অতিথিকে সঙ্গে নিয়ে উপস্থিত হন ভারতের রাষ্ট্রপতি। সাড়ে ১০টায় জাতীয় পতাকা (তেরঙা বা তিরঙ্গা) উত্তোলনের মধ্য দিয়ে প্রজাতন্ত্র দিবস উদ্যাপন অনুষ্ঠান শুরু হয়।
প্রধানত এই দিনেই নিজেদের সামরিক শক্তি প্রদর্শন করে ভারত। এদিনের কুচকাওয়াজের অন্যতম বিষয় ছিল নারী-উন্নয়ন ও ক্ষমতায়ন। তাই এবারই প্রথম তিন বাহিনীর নারী সদস্যরা তাদের শক্তি প্রদর্শন করেন। বিমান বাহিনীর ফ্লাই পাস্টে ১৫ জন নারী পাইলট অংশ নেন।
এবারের প্রজাতন্ত্র দিবস উদ্যাপন অনুষ্ঠানের কুচকাওয়াজে ভারত-ফ্রান্সের মধ্যকার মজবুত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অংশ হিসেবে অংশ নেয় ফ্রান্সের আর্মড ফোর্সের এক প্রতিনিধি দল।
এর পাশাপাশি ভারতের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যও তুলে ধরা হয় এই কুচকাওয়াজে। বিভিন্ন রাজ্য ও কেন্দ্রের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সুসজ্জিত ট্যাবলো বের করা হয়। উত্তর প্রদেশের রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে অযোধ্যার রাম মন্দিরের আদলে একটি ট্যাবেলো বের করা হয়।
জাতীয় সংগীতের মধ্যে দিয়ে স্থানীয় সময় দুপুর সাড়ে ১২টায় অনুষ্ঠান শেষ হয়। অনুষ্ঠান শেষে প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে আসা সব অতিথিকে শুভেচ্ছা জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে যে কোনো নাশকতা ও হামলার আশঙ্কায় দিল্লিসহ আশপাশের এলাকা নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছিল। দিল্লিজুড়ে মোতায়েন করা হয়েছিল প্রায় ৭০ হাজার নিরাপত্তারক্ষী।
দিল্লির পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা, উত্তরাখান্ড, মহারাষ্ট্র, মিজোরাম, গুজরাট, বিহার, অন্ধ্রপ্রদেশ, হরিয়ানা, কেন্দ্রীয়-শাসিত অঞ্চল জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখেও বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ৭৫তম প্রজাতন্ত্র দিবস পালন করা হয়।
এদিকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে কলকাতার রেড রোডে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি, বিধানসভার স্পিকার বিমান ব্যানার্জিসহ রাজ্য মন্ত্রিসভার সব সদস্য, সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় শীর্ষ কর্মকর্তাসহ আমন্ত্রিত অতিথি ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।
প্রজাতন্ত্র দিবসে ভারত ও বাংলাদেশের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সীমান্তে শুভেচ্ছা ও মিষ্টি বিনিময় করা হয়। পশ্চিমবঙ্গের বনগায় পেট্রাপোল স্থলবন্দরেও মর্যাদার সঙ্গে প্রজাতন্ত্র দিবস পালন করে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ।