অর্থনীতি রিপোর্ট : কয়লা বিক্রি করে ৪১৯ কোটি টাকা বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) কাছ থেকে আদায় করতে পারছে না বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি। তারা পিডিবির কাছ থেকে টাকা আদায় না করতে পেরে জ্বালানি বিভাগের নির্দেশনা চেয়েছে।
গত ২৪ মার্চ জ্বালানি বিভাগে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুল ইসলাম সরকার জানান, পিডিবির কাছে মোট ৪১৯ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। এই বকেয়ার মধ্যে ২৮৩ কোটি টাকা কয়লার মূল্য বৃদ্ধি জনিত বকেয়া। এ বিষয়ে পিডিবিকে চিঠি দিয়ে আলাপ করলেও বিষয়টি গুরুত্ব পায়নি। অন্যদিকে ১৩৬ কোটি টাকা কয়লা বিক্রির চলতি বকেয়া রয়েছে।
কয়লা কোম্পানি বলছে, ২০১৩ সালের ৫ জানুয়ারি কয়লার দাম বৃদ্ধি করা হয়। তখন টন প্রতি কয়লার দাম নির্ধারণ করা হয় ১৭৬ মার্কিন ডলার। যা ১ জানুয়ারি ২০২২ থেকে কার্যকর করা হয়। এর আগে প্রতি টন কয়লার দাম ছিল ১৩০ ডলার। অর্থাৎ ভ্যাট এবং কর ছাড়াই প্রতি টন কয়লার দাম ৪৬ ডলার বৃদ্ধি পায়।
কয়লা কোম্পানির দাবি ওই বছরের (২০২২) জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সময়ে তারা পিডিবিকে ৬ লাখ ১৭ হাজার ৫৭০ টন কয়লা দিয়েছে। বর্ধিত বিল বাবদ ২৮৭ কোটি ৬৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা পাবে। বিলম্ব মাশুলসহ ওই বিল পরিশোধের সব শেষ সময় ছিল ২০২৩ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি।
পিডিবি বিল পরিশোধ না করাতে ওই বছর ৩ মে জ্বালানি বিভাগ থেকে বিদ্যুৎ বিভাগকে বিল পরিশোধের জন্য অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু জ্বালানি বিভাগের অনুরোধের পরও বিল পরিশোধ করেনি পিডিবি।
এরপর গত ৪ মার্চ কয়লা কোম্পানি পেট্রোবাংলাকে আবারও বিষয়টি জানায়। পেট্রোবাংলা থেকে গত গত ২১ মার্চ আবার বিষয়টি জ্বালানি বিভাগকে জানানো হয়।
গত ২৪ মার্চ এ বিষয়ে পিডিবির কর্মকর্তাদের সঙ্গে জ্বালানি বিভাগের একটি বৈঠক হয়েছে। বিপিডিবি’র প্রতিনিধি ওই সভায় জানান, বকেয়া পাওনা আদায় সংক্রান্ত তথ্য যাচাই করে পিডিবি একটি ব্যবস্থা নেবে। এরপর কয়লা কোম্পানি পিডিবিকে বকেয়ার বিষয়টি ইমেলে জানান।
বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির মার্কেটিং বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, ২০২১ সাল থেকেই এই বকেয়া শুরু হয়। চলতি মাসের এপ্রিল পর্যন্ত এই বকেয়া জমেছে। এর মধ্যে কয়লার বাড়তি দাম, বিলম্ব মাসুল এবং ভ্যাটের টাকাসহ আর বেশ কিছু খাতের টাকা যুক্ত হয়ে এই ৪১৯ কোটি টাকা পিডিবির কাছে আমাদের বকেয়া পড়েছে। আমরা বকেয়া আদায়ে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা চেয়েছি।
এদিকে পিডিবি সূত্র জানায়, মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত পেলে তারা ব্যবস্থা নেবে।