মিরর ডেস্ক : হামাসের হাত থেকে জিম্মি উদ্ধারের আপাতত কোনো উন্নতি নেই। তাই ইসরায়েলের নাগরিকদের ক্ষোভ দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর প্রতি। শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) ৪০ জনেরও বেশি সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তা, খ্যাতিমান বিজ্ঞানী ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নেতা তাকে অপসারণের দাবি জানিয়েছেন। ফলে আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ের মধ্যেই এবার ক্ষমতা হারানোর শঙ্কায় ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, নেতানিয়াহুকে ইসরাইলের ‘অস্তিত্বের’ জন্য হুমকি উল্লেখ করে ইসরাইলের প্রেসিডেন্ট এবং পার্লামেন্টের স্পিকারের কাছে ওই কর্মকর্তারা চিঠি দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজোগ এবং শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) আইনসভা নেসেটের স্পিকার আমির ওহানাকে চিঠিটি পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে ইসরাইলের বৈদেশিক ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা পরিষেবার চারজন সাবেক পরিচালক, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) দুই সাবেক প্রধান এবং তিনজন নোবেল পুরস্কার বিজয়ী রয়েছেন।
চিঠিতে নেতানিয়াহুর ইসরায়েলের বিচার বিভাগের ক্ষমতা কমিয়ে সংশোধনী আনার বিতর্কিত প্রচেষ্টা নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে ভঙ্গুর করেছে দাবি করেন তারা। এর ফলেই ৭ অক্টোবরের হামলা হয়েছে বলে ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
চিঠিতে বলা হয়, আমরা বিশ্বাস করি, নেতানিয়াহু এমন পরিস্থিতি তৈরি করেছেন, যার ফলে ১ হাজার ২০০–এর বেশি ইসরায়েলি এবং অন্যদের নৃশংস গণহত্যা, সাড়ে ৪ হাজারের বেশি আহত এবং ২৩০ জনেরও বেশি ব্যক্তিকে অপহরণ করা হয়েছে। যাদের মধ্যে ১৩০ জনের বেশি এখনো হামাসের হাতে বন্দী। এসব হতাহতের রক্ত নেতানিয়াহুর হাতে লেগে আছে।
এদিকে নেতানিয়াহুর ক্ষমতাচ্যুতির দাবিকে নজিরবিহীন উল্লেখ করে ইসরায়েলের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সাবেক প্রধান বলেছেন, নেতানিয়াহু ইসরাইলের নেতৃত্ব দিতে অক্ষম।
বিচার ব্যবস্থা সংস্কার আইন পরিবর্তনের প্রতিবাদে দীর্ঘদিন ধরে চাপের মুখে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী। বিক্ষোভের মধ্যেই গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর ইসরাইলিদের নতুন তোপের মুখে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
হামাসের হাতে বন্দিদের মুক্তির দাবিতে পার্লামেন্টের ভেতরেই স্বজদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীকে। বেশ কয়েকবার ক্ষমতাচ্যুত করার দাবিও উঠেছে। এছাড়া তেল আবিবে নেতানিয়াহু বিরোধী বিক্ষোভও অব্যাহত রয়েছে।
জিম্মি মুক্তির বিনিময়ে ইসরাইল গাজায় দুই মাসের যুদ্ধবিরতির যে প্রস্তাব দিয়েছিল, তা ফিরিয়ে দিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। নাম প্রকাশ না করার শর্তে মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) বার্তা সংস্থা এপিকে এ কথা জানিয়েছেন মিশরের এক সিনিয়র কর্মকর্তা। অন্যদিকে ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলায় ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নিহতের সংখ্যা ২৬ হাজার ছাড়িয়েছে। শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে আল জাজিরার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এছাড়া ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় অভিযান চালাতে গিয়ে পাল্টা হামলায় একদিনে ২৪ জন ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছে। হামাসের সঙ্গে সংঘাত শুরুর পর এই প্রথম একদিনে এত সেনা হারালো ইসরায়েল। সিএনএনের খবর।