চট্টগ্রাম : সোমালি জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্ত বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর ২৩ নাবিক এক মাস পর চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে। মঙ্গলবার (১৪ মে) বিকাল ৪টায় তারা একটি লাইটার জাহাজে বন্দরে পৌঁছান। এমভি আব্দুল্লাহর মালিক প্রতিষ্ঠান কেএসআরএমের লাইটার জাহাজ এমভি জাহান মণি-৩ বন্দরের এনসিটি ১ নম্বর জেটিতে নোঙর করে।
এ সময় চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মো. সোহাইল, চট্টগ্রামের সিটি মেয়র রেজাউল করিম, কেএসআরএমের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, নাবিকদের স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।
জিম্মিদশা থেকে মুক্ত হওয়ার পর নাবিকদের কাছে পাওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন স্বজনেরা। সেই দিনের অবসান হলো মঙ্গলবার দুপুরে। নাবিকদের দেখা পেতে স্বজনেরা বন্দর জেটিতে ভিড় করেছিলেন। তাদের কারও হাতে ছিল ফুল, কারও হাতে কেক। এক মাস আগে সোমালিয়ার দস্যুদের হাত থেকে মুক্তি পেলেও এত দিন নাবিকদের দেখা পাননি স্বজনেরা। এমভি আবদুল্লাহ জাহাজটি আরব আমিরাত ঘুরে চট্টগ্রামে আসার পর প্রথমবার নাবিকদের দেখা পেলেন স্বজনেরা। নাবিকদের চট্টগ্রাম পৌঁছানো উপলক্ষে বন্দরে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
এমভি আব্দুল্লাহর মালিক প্রতিষ্ঠান কেএসআরএমের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান রাহাত বলেন, ‘আমাদের ভাইয়েরা আমাদের কাছে ফিরে এসেছেন, এর চেয়ে আনন্দের আর কী হতে পারে। আমরা অনেক খুশি। জিম্মি হওয়ার পর থেকে মুক্তি পাওয়া এবং দেশে ফিরে আসা পর্যন্ত সব কাজ সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়েছে। আমরা সবার কাছে কৃতজ্ঞ।’
গতকাল সন্ধ্যায় কুতুবদিয়ায় নোঙ্গর করে এমভি আব্দুল্লাহ। ২৩ নাবিককে নিয়ে লাইটার জাহাজটি সকাল ১১টার দিকে কুতুবদিয়া থেকে রওনা হয়। জাহাজটির দায়িত্ব নিতে নাবিকদের নতুন একটি দল সোমবার (১৩ মে) রাত সাড়ে ১০টার দিকে জাহাজে গেছে। ফিরে আসা নাবিকেরা নতুন দলের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেছেন।
গত ১২ মার্চ ভারত মহাসাগর থেকে কেএসআরএম গ্রুপের এমভি আবদুল্লাহ জাহাজ ছিনতাই করেছিল সোমালিয়ার দস্যুরা। মুক্তিপণ দিয়ে ৩৩ দিনের মাথায় ১৩ এপ্রিল দিবাগত রাতে জাহাজটি মুক্ত করা হয়। এরপর জাহাজটি প্রথমে আমিরাতের আল হামরিয়া বন্দরে পৌঁছায়। সেখানে পণ্য খালাস শেষে আরেকটি বন্দর থেকে চুনাপাথর বোঝাই করে চট্টগ্রামের পথে রওনা হয়েছিল জাহাজটি। ১৩ দিনের মাথায় জাহাজটি বাংলাদেশের জলসীমায় এসে পৌঁছাল। আরব আমিরাত থেকে রওনা হওয়ার ১৪ দিন এবং জিম্মিদশা থেকে মুক্ত হওয়ার এক মাসের মাথায় স্বজনদের কাছে ফিরলেন নাবিকেরা।