ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি : সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন গ্রুপে জানিয়ে দেওয়া হয় দেশের বিভিন্ন বাজারের ডিমের দাম। আর সেই দামের সঙ্গে মিল রেখে দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে ডিমের দাম বাড়িয়ে দেন ব্যবসায়ীরা। এর পাশাপাশি মোবাইল ফোনেও খুদে বার্তার মাধ্যমে ডিমের দাম জানানো হয়। গত ১৫ দিনে ফুলবাড়ীতে পাইকারি বাজারে ডিমের দাম বেড়েছে ছয় বার। প্রতিটি ডিমের দাম বেড়েছে গড়ে ২ টাকা ৫০ পয়সা। এর ফলে খুচরা বাজারেও ডিমের দাম বাড়ছে।
জানা গেছে, রবিবার পৌর এলাকার পাইকারি বাজারে প্রতিটি ডিম বিক্রি হয়েছে ১২ টাকা ৬৬ পয়সায় হিসেবে। এক খানা (৩০টি) ৩৮০ টাকা দরে। আর খুচরা বাজারে দাম ছিল ১৩ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১৪ টাকা। এতে এক হালি ডিম বিক্রি হয়েছে এলাকাভেদে বর্তমানে ৫৪-৫৬ টাকা দরে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডিমের সরবরাহ থাকলেও ‘মেসেজ’ করে ডিমের দাম জানিয়ে দেওয়ায় বাজারে অস্থির হয়ে যাচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে থাকা বিভিন্ন গ্রুপ দিনাজপুর, রংপুর, রাজশাহী ও ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকার ডিমের বাজার দর জানিয়ে দেয়। এতে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা সুযোগ নিয়ে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। কোনো রসিদ থাকে না তাদের কাছে।
দোকানিদের অভিযোগ, ফুলবাড়ীতে বিভিন্ন স্থান থেকে ডিম আসে। আগের রাতে ডিম পাঠিয়ে দেওয়া হলেও এর সঙ্গে কোনো রসিদ দেওয়া হয় না। দাম জানানো হয় মোবাইল ফোনে। এর পাশাপাশি সম্প্রতি ফেসবুকে বিভিন্ন গ্রুপেও ডিমের দাম জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সব মিলিয়ে ডিমের বাজার এখন অস্থির হয়ে পড়েছে। এতে ক্রেতা সাধারণের পক্ষে ডিম কেনা দায় হয়ে পড়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডিমের এক পাইকারি ব্যবসায়ী বলেন, ডিমের দাম বাড়ার পেছনে মূল কারণ মোবাইল ফোন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের খুদে বার্তা। এক এলাকায় দাম বাড়লে তা এসবের মাধ্যমে দ্রুত দেশের সব বাজারে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ফলে কয়েক মিনিটের মধ্যেই দাম বেড়ে যাচ্ছে। ডিমের বাজার বড় বড় ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে নিয়ন্ত্রণ করায় অস্থির হয়ে গেছে ডিমের বাজার।
জানা যায়, ১৫ দিন আগে পাইকারি বাজারে প্রতিটি ডিমের দাম ছিল ৯ টাকা ২৫ পয়সা। পরের চারদিনে দফায় দফায় দাম বেড়ে বিক্রি হয় ১০ টাকা ৫০ পয়সায়। এরপর থেকে প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ পয়সা বেড়ে দাম ঠেকেছে ১২ টাকা ৬৬ পয়সায়।
ফুলবাড়ী পৌরশহরের ডিম ব্যবসায়ী দুলাল হোসেন বলেন, মাসের শুরুতে ডিমের দাম কম ছিল। তবে কয়েক দিন আগে রংপুর ও রাজশাহীতে ডিমের দাম বেড়ে যাওয়ায় সংবাদ ফেসবুক থেকে জানার পর এখানেও দাম বেড়েছে। ডিমের দাম বেড়ে যাওয়ায় বেচাবিক্রিও কমে গেছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর মো. আল কামাহ্ তমাল বলেন, ‘ডিম মজুত করে যারাই সিন্ডিকেট করার চেষ্টা করবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোন অবস্থাতেই কাউকে ডিম মজুতের সুযোগ দেওয়া হবে না।’ তিনি জানান, উপজেলা প্রশাসনের বাজার মনিটরিং কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।