ঘন কুয়াশা আর কনকনে শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে উত্তরাঞ্চলের জনজীবন। আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন অনেকেই। পৌষের শেষেরদিনগুলো হিমশীতল করে ছেড়েছে মানুষজনকে।এদিকে শুরু হলো মাঘ মাস। আর এই মাঘ মাসে আরও অধিক শীতের খবর জানাচ্ছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। শৈত্যপ্রবাহের সাথে বুধবার থেকে বৃষ্টিও ঝড়বে বলে জানান দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এদিকে কনকনে শীতে দিনাজপুরসহ উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। চলমান শৈত্যপ্রবাহের মধ্যে শনিবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি এবং রবিবার ৮ দশমিক ৫ সেলসিয়াস ডিগ্রি রেকর্ড করা হয়েছে দিনাজপুরে। টানা ৩দিন দেখা নেই সুর্যের। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস নিয়ে শুক্রবার চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। সঙ্গে ছিল কিশোরগঞ্জও। একই দিনে ঢাকার সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে যথাক্রমে ২২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও ১৩ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কয়েকটি জেলা বাদে কোথাও শৈত্যপ্রবাহ না চললেও প্রচণ্ড শীতে ঢাকাসহ সারাদেশেই জনজীবন বিপর্যস্ত। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, পুরো জানুয়ারি জুড়েই শীতের প্রকোপ থাকবে।
বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের মানুষের শীতের কষ্ট শুরু হয় নভেম্বর মাসের শেষ দিক থেকে। চলে ফেব্রুয়ারির শেষ পর্যন্ত।এ সময়ের মধ্যে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায় কয়েকবার। যখন শৈত্যপ্রবাহ চলে, তখন জনজীবনে দুর্ভোগ বেড়ে যায়; বিশেষভাবে কষ্ট পায় শিশু ও বয়স্ক মানুষরা। যেসব শ্রমজীবী মানুষ খোলা আকাশের নিচে কাজ করেন, তারা বেশ বিপাকে পড়ে যান। উত্তরের হিমালয় পর্বতমালা থেকে বয়ে আসে হিমশীতল বাতাস। দিনের বেলা কখনো সূর্যের দেখা মেলে, কখনো মেলে না। যখন আকাশে সূর্য থাকে, তখনো রোদের তীব্রতা থাকে না। রাতে বেশ ঘন হয়ে প্রায় বৃষ্টির মতো ঝরে শিশির। দ্বিপ্রহর পর্যন্ত থাকে ঘন কুয়াশা। গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলের মানুষের পক্ষে এ মাত্রার শীতে অভ্যস্ত হওয়া কঠিন। বাসস্থান শীত আটকানোর উপযোগী নয়; পর্যাপ্ত গরম কাপড়ের নিশ্চয়তা নেই বিপুলসংখ্যক মানুষের। শ্রমজীবী মানুষের কাজের পোশাক শীত নিবারণের উপযোগী নয়। তাছাড়া দারিদ্র্য ও পুষ্টির অভাব যেসব পরিবারে বেশি, শীত তাদের স্বাস্থ্যের প্রতি হুমকি হয়ে আসে।