দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আজ। ইলেকশন কমিশন একটি ভালো নির্বাচন উপহার দেওয়ার জন্য জাতির কাছে অঙ্গীকারবদ্ধ। সব প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করতে কমিশনে অত্যন্ত ব্যস্ত সময় যাচ্ছে। নির্বাচনী প্রচারণাও সমাপ্ত হয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোও সংগত কারণেই ব্যস্ত সময় পার করছে। সব পক্ষেরই বক্তব্যে একটি সাধারণ বিষয় উপস্থিত, সেটি হলো- সবাই চায় একটি সুষ্ঠু নির্বাচন। নির্বাচনের আগে বৃহস্পতিবার জাতির উদ্দেশে প্রদত্ত ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাংবিধানিক ধারা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। নারায়ণগঞ্জের জনসভায় তিনি বলেছেন, কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিয়ে প্রমাণ করুন দেশে গণতন্ত্র আছে।
দুঃখজনক হলো, একাধিকবার সরকার গঠনকারী একটি দল বিএনপি রাজনৈতিক ভূমিকা ছেড়ে সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছে। ভোটের দিনও তারা হরতাল ডেকেছে। ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যাওয়া প্রতিহত করারও ঘোষণা দিয়েছে তারা। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক এবং একইসঙ্গে নির্বাচনকালীন মহাপরাধ।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, গণতন্ত্র জোরদার এবং অব্যাহত উন্নয়নের স্বার্থে তাঁর সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য করা। এবারের নির্বাচনের প্রার্থীদের ধারা কিছুটা ব্যতিক্রমীও বটে। সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের বাইরে দলহীন স্বতন্ত্রপ্রার্থী এবং দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের নির্বাচনের অভিজ্ঞতা রয়েছে ভোটার তথা দেশবাসীর। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগের সংস্কৃতিতে নতুন মাত্রা নিয়ে এসেছে। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর সিদ্ধান্ত দেন যে, তার দলের মনোনয়নের দাবিদার যদি মনোনয়ন না পান, সেক্ষেত্রে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন।
সবপক্ষই চান নির্বাচন সুষ্ঠু হোক। কেউই ত্রুটিযুক্ত ও প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের প্রত্যাশা করেন না, এটাই স্বাভাবিক। তাই সবপক্ষেরই দায় রয়েছে, যাতে নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে। নিজ নিজ দায়বদ্ধতা থেকে অন্তরে দেশপ্রেম ও গণতান্ত্রিক চেতনা লালন করে তাই ইতিবাচক ভূমিকাও রাখা চাই। সেটাই প্রত্যাশিত। কিছুতেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানো যাবে না। নির্বাচন সুষ্ঠু হতে হলে নির্বাচন প্রক্রিয়ার আদ্যোপান্ত সুষ্ঠু হওয়া আবশ্যক। তবেই না গন্তব্যে সুন্দরভাবে পৌঁছানো সম্ভব হবে।
নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না বলে যারা চিৎকার চেঁচামেচি করে করুক, নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগেই এটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপপ্রয়াস পাক, দেশের সচেতন ও উন্নয়নকামী মানুষ সম্মিলিতভাবে নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য যাবতীয় বাধা অপসারণ করবে, এমনটাই প্রত্যাশিত। ভোট হলো উৎসব। আনন্দঘন দিনটি যেন সংঘাত-সহিংসতায় কোনোভাবেই কালিমালিপ্ত না হতে পারে, সেদিকে নজর রাখা দেশপ্রেমিক নাগরিকের দায়িত্ব ও কর্তব্য।