গাইবান্ধা প্রতিনিধি : এবারের এসএসসি পরীক্ষায় দিনাজপুর বোর্ডের মধ্যে পাসের দিক থেকে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে গাইবান্ধা জেলা। এ জেলায় পাসের হার ৮২ দশমিক ৩৫ শতাংশ। তবে এ বোর্ডের আওতাধীন আট জেলার মধ্যে যে চারটি প্রতিষ্ঠানে কোনো শিক্ষার্থী পাস করেনি, এমন একটি বিদ্যালয় গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে উপজেলার তারাপুর ইউনিয়নের ঘঘোয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। রবিবার (১২ মে) প্রকাশিত এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে এ তথ্য জানা গেছে।
বিদ্যালয়টিতে পাঠদানের জন্য ১৩ জন শিক্ষক থাকলেও ১৪ জন শিক্ষার্থীর একজনও পাস করতে পারেনি। এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
প্রতিষ্ঠার পর ২০০৫ সালে এমপিওভুক্ত হয় প্রতিষ্ঠানটি। গত বছর এসএসসি পরীক্ষায় ১৬ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করলে ১৩ জন পাস করে। ২০২২ সালে ২১ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করে ১৭ জন। এ বিষয়ে ঘগোয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল হাকিমের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ফলাফল বিপর্যয়ের কারণ জানতে চাইলে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক একাডেমিক সুপারভাইজার বেলাল হোসেন বলেন, ‘বিদ্যালয়টি উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামে অবস্থিত। এ অঞ্চলে মেয়ে শিক্ষার্থীদের বাল্যবিবাহের হার অনেক বেশি। সবার ফেল করার পেছনে গণিতের শিক্ষক বেশি দায়ী। অধিকাংশ শিক্ষার্থী গণিতে ফেল করেছে। বিদ্যালয়টিতে মামলা সংক্রান্ত জটিলতাও রয়েছে। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ফিরিয়ে আনতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সেজন্য আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।’
এ বছর গাইবান্ধা জেলার সাত উপজেলা থেকে এসএসসি পরীক্ষায় মোট ২৭ হাজার ৮৯৩ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এর মধ্যে পাস করেছে ২২ হাজার ৭৯১ জন। পাসের হার ৮২ দশমিক ৩৫ শতাংশ। তাদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ হাজার ৫৮২ জন।
গাইবান্ধা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রোকসানা বেগম বলেন, ‘আজ সকালে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেছেন। বিদ্যালয়ে লেখাপড়ার মান একেবারেই নিম্নমানের। শিক্ষকদের কোনো দায়বদ্ধতা নেই। ১৩ জন শিক্ষক মিলে ১৪ জন শিক্ষার্থীকে পাস করাতে না পারাটা দুঃখজনক।’
তিনি আরও বলেন, ‘১৪ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৯ জনই গণিতে ফেল করেছে। ৩ জন ইংরেজিতে ও ২ জন বাংলা-ইংরেজি উভয় বিষয়ে ফেল করেছে। গণিতের শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। প্রধান শিক্ষক আগামী ১৯ মে পরীক্ষার ফলাফল পুনরায় মূল্যায়ন করতে কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করবেন। সেখানকার ফলাফল যাচাই করে প্রতিষ্ঠান প্রধানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া প্রধান শিক্ষক ফলাফল বিপর্যয়ের প্রাথমিক কারণ সম্পর্কে জেলা প্রশাসনকে অবগত করেছেন।’