মিরর ডেস্ক : বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকার দেশের অনেক কিছু ধ্বংসের পাশাপাশি মানুষের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করে দিতে চেয়েছিল। তবে দেশকে নিয়ে এখনো সম্ভাবনা আছে। সেই সম্ভাবনা বাস্তবায়নে বিএনপির দিকেই মানুষ তাকিয়ে আছে। মানুষের সেই আকাঙ্ক্ষা পূরণে আমাদের নিজেদের সর্বশক্তি নিয়োগ করতে হবে।
কুমিল্লায় বিএনপি নেতা-কর্মীদের অংশগ্রহণে আয়োজিত এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধান অথিতির ভাষণে তারেক রহমান আরো বলেন, ‘বিএনপির ওপর মানুষের যে আস্থা রয়েছে, তা ধরে রাখার দায়িত্ব আমাদেরই। আর এ জন্য আচার-আচরণ এমন হতে হবে, মানুষ যাতে আমাদের ওপর আস্থা না হারায়, মানুষ যেন ধরে রাখতে পারে। সবার প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে এ কাজ করতে হবে।
দেশের প্রতিটি খাতে কঠোর জবাবদিহি ব্যবস্থা থাকলে দেশ বদল হয়ে যাবে বলে সবাইকে মনে করিয়ে দিয়ে তারেক রহমান কর্মশালায় আরো বলেন, আগামীতে আমাদের প্রত্যাশা দেশের মানুষের জন্য একটি জবাবদিহিমূলক সরকার গঠন করা, যারা মানুষের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকবে। তবেই আমরা পর্যায়ক্রমিকভাবে দেশের সমস্যাগুলো সমাধান করতে পারবো।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বিএনপি আগামীতে সরকার গঠন করলে কী করতে চায়, সেই বিষয়গুলোর বর্ণনা আছে ৩১ দফায়। গত কয়েক মাসে সমাজের বিভিন্ন ব্যক্তি বা সংগঠন রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে পুনর্গঠনে সংস্কারের কথা বলেছেন। বিএনপি কিন্তু এ কথা ২ বছর আগে থেকেই বলে আসছে। যখন স্বৈরাচার এ দেশে ছিল, তখনো এই সংস্কারের কথা বলেছে বিএনপি। বিএনপির সব সময় দেশ ও দেশের মানুষকে নিয়ে চিন্তা করে। অনেকেই বিশ্বাস করতে চাইত না যে স্বৈরাচার বিদায় হবে, কিন্তু বিএনপি বিশ্বাস করত, স্বৈরাচারের বিদায় হবেই। এ জন্য তারা প্রথমে ২৭ দফা দিয়েছিলেন, পরে সেটা ৩১ দফায় পরিণত হয়।
বিএনপির শীর্ষ এই নেতা বলেন, আমাদের বহু নেতা–কর্মী বিগত স্বৈরাচারের সময়ে গুম হয়েছে, খুন হয়েছে, অত্যাচার–নির্যাতিত হয়েছে। এরপরও নেতা–কর্মীরা দল ছাড়েনি একটি বিশ্বাস নিয়ে। এ বিশ্বাস হলা মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলন সফল হবেই। আমার বাবাকে দেশের জন্য কাজ করায় শহীদ হতে হয়েছে ষড়যন্ত্রকারীদের হাতে। আমার ভাইকেও শহীদ হতে হয়েছে বা মারা গিয়েছে ষড়যন্ত্রকারীদের অত্যাচারে। আপনারা দেখেছেন, আমার মাকে কীভাবে অত্যাচার, নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। বাংলাদেশের বিএনপির অনেক নেতাকর্মীর পরিবারের কাহিনী একই রকম। অনেক নেতাকর্মীর এই কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে ১৬ বছর ধরে।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, যে দলের ৬০ লাখ নেতা-কর্মী গায়েবি মামলা ও অত্যাচারের শিকার হয়েছে, সেই দলের ওপর এ দেশের মানুষ প্রত্যাশা রাখে। তাই আমাদের প্রস্তুত করতে হবে মানুষের জন্য। নিজের কথা নয়, আমাদের দেশ ও মানুষের কথা ভাবতে হবে।
কর্মশালায় কুমিল্লা বিভাগীয় বিএনপির আওতাধীন কুমিল্লা দক্ষিণ ও উত্তর জেলা, কুমিল্লা মহানগর, চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের সাড়ে ছয় শতাধিক নেতা–কর্মী অংশগ্রহণ করেন। বিএনপি কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে কর্মশালা পরিচালনা করছেন বিএনপির প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেন।
কর্মশালায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির ত্রাণ ও পুনর্বাসনবিষয়ক সম্পাদক আমিন উর রশিদ, শিল্পবিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম, বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ হোসেন আলমগীর, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা মাহাদী আমিন, কুমিল্লা বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, সহপ্রশিক্ষণ সম্পাদক রেহানা আক্তার বানু, সহত্রাণ ও পুনর্বাসনবিষয়ক সম্পাদক নেওয়াজ হালিমা আরলি, সহগণশিক্ষা–বিষয়ক সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন প্রমুখ।