ঢাকা : ভারতকে ট্রানজিট দেওয়ার বিনিময়ে বাংলাদেশ কোনো কিছু আদায় করতে পারেনি বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম চরমোনাই পির।
তিনি বলেন, বিনাশর্তে এমনকি প্রায় বিনা মাসুলে ট্রানজিট দেওয়া হয়েছে। ট্রানজিট আমাদের ভাবিয়ে তোলে। নিজেদের সার্বভৌমত্বের ওপর থাকা অধিকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। আওয়ামী লীগ সরকার নিজেদের অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার পেছনে ভারতের অবদানের প্রতিদান হিসেবে তাদের রেল ট্রানজিট দিয়েছে।
চরমোনাই পির বলেন, বর্তমান সরকারের সৃষ্ট নানাবিধ সংকটের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সর্বশেষ ভারত সফর সংকটকে আরও ঘনীভূত করেছে। যে চুক্তিগুলো করা হয়েছে তাতে কোনো আওয়ামী লীগারও বাংলাদেশের স্বার্থ দেখাতে পারছে না। কানেক্টিভিটির নামে যা করা হয়েছে, তার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভাষায় পরিষ্কার হয়েছে; ‘বাজার-টাজার করতে যাওয়া ও ভারতে চিকিৎসা নিতে যাওয়া’ এর মূল লক্ষ্য। প্রধানমন্ত্রী যখন সীমানাবিহীন ইউরোপের দৃষ্টান্ত দেখান তখন সীমানা ও স্বাধীনতা নিয়ে আমরা শঙ্কিত না হয়ে পারি না।
সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, নেপাল-ভুটানের সঙ্গে আমাদের বহুল কাঙ্ক্ষিত ট্রানজিট না পাওয়া, তিস্তা, গঙ্গার পানি নিয়ে কোনো অগ্রগতি না হওয়া, সীমান্তে মানুষ হত্যা বন্ধ না হওয়া, সেভেন সিস্টারে আমাদের বাণিজ্য সম্ভাবনা নষ্ট করা এবং নিজেদের নিরাপত্তাঝুঁকি, কৌশলগত ভূরাজনীতির নানা জটিলতা সত্যেও যেভাবে ট্রানজিট দেওয়া হয়েছে তাতে বাংলাদেশের স্বাধীনসত্তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। কারণ ভারত সরকার আন্তর্জাতিক চুক্তির ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গকেও বাংলাদেশের চেয়ে বেশি বিবেচনায় রাখে। বর্তমান সরকার স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশকে ভারতের অঙ্গরাজ্য পশ্চিমবঙ্গের চেয়েও গুরুত্বহীন করে ফেলেছে।
ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব আতাউর রহমান গাজীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্য সভাপতি মাহামুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদিন, এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, গণ অধিকার পরিষদের একাংশের আহ্বায়ক কর্নেল (অব.) মিয়া মশিউজ্জামান, গণফোরামে (একাংশ) সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরীসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।