মো. আবুসালেহ সেকেন্দার : সবযুগে যৌনতা একটি অতিগোপন বিষয়। গোপন বিষয়ের প্রতি মানুষের আর্কষণ সব থেকে বেশি থাকে। তাই যৌন শব্দযুক্ত যে কোনও ঘটনা খুব সহজে ভাইরাল হয়। আর ভাইরাল হলেই কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে এবং তারা ত্বরিৎ পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে। সম্প্রতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন সহকারী প্রক্টর ও তার সহকারী এক ছাত্রের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানিসহ নানা অভিযোগ তুলে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রী আত্মহত্যা করে। বিচারের দাবিতে ক্যাম্পাস উত্তপ্ত হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ওই সহকারী প্রক্টর ও ছাত্রকে বহিষ্কার করে। ছাত্রীর মায়ের মামলা দায়েরের পরিপ্রেক্ষিতে ওই বহিষ্কৃত সহকারী প্রক্টর ও ছাত্র গ্রেফতার হয়।
একটি ঘটনা ঘটলে অন্য ঘটনাও সামনে আসে। পুরনো কাঁসুন্দি ঘাটা হয়। ওইরকম পুরনো কাঁসুন্দি ঘাটতে গিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম ও টেলিভিশন বিভাগের অন্য একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধেও আন্দোলন জমে ওঠে। ফলে তিনি অন্যযাত্রায় রক্ষা পেলেও এই যাত্রায় শাস্তির কবলে পড়েন। শুধু যৌন হয়রানির ঘটনা নয়, অন্য ঘটনার ক্ষেত্রেও দেখা যায় কেবল আন্দোলন জমলেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অপরাধীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে। অন্যসময়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সব জেনে শুনে উট পাখির মতো মাটিতে মুখ গুজে বসে থাকে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের একজন শিক্ষক ২০২২ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত স্নাতকোত্তর ও স্নাতকে অধ্যায়নরত ২০০ ছাত্রীর ওপর একটি গবেষণা পরিচালনা করেন। ওই গবেষণায় দেখা যায় যে যৌন হয়রানির প্রতি দশটি ঘটনার নয়টি ঘটনাই চাপা পড়ে যায়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও অমন ঘটনা আছে। দর্শন বিভাগের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে ২০১৫ ও ২০১৬ সালে ধারাবাহিকভাবে ছাত্রীর সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ ও নিপীড়নের অভিযোগ জমা পড়লেও এত বছরেও ওই ঘটনার বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি। ছাত্রীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন তদন্ত কমিটি গঠন করে। কিন্তু এর মধ্যে কয়েকজন উপাচার্যের বদল হলেও ওই ঘটনার বিচার কাজ সম্পন্ন হয়নি। অভিযুক্ত শিক্ষক শিক্ষক রাজনীতির প্রভাবশালী নেতা হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কোনও উপাচার্যও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
তবে শিক্ষক যদি রাজনৈতিক অবস্থানে দুর্বল হন তাহলে অনেক সময় অপরাধ প্রমাণিত নাহলেও শাস্তির ঘটনা ঘটে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় যৌনহয়রানির অভিযোগে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে। কোনও অকাট্য প্রমাণ না থাকলেও “ছাত্রীদের কথা শুনে ও পারিপার্শিক অবস্থা বিবেচনা করে” তদন্ত কমিটি তার শাস্তির সুপারিশ করেছে। (দৈনিক প্রথম আলো, ২৯ এপ্রিল ২০১৮)। ওই শিক্ষক রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে দুর্বল হওয়ায় ওই শাস্তি মুখ বুজে মেনে নিয়েছেন। কিন্তু তিনি আইনগত ব্যবস্থা নিলে ওই শাস্তি থেকে তার অব্যহতি পাওয়ার প্রবল সম্ভবনা ছিল। কারণ অকাট্যপ্রমাণ ছাড়া স্বার্থগত বিরোধ আছে এমন কারোর শুধু মুখের কথায় কোনও ব্যক্তিকে শাস্তি দেওয়াতো দূরের কথা অপরাধী বলা যায় না।
একই বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক হিসেবে উপর্যুক্ত ঘটনা আমি নিবিড়ভাবে অনুসন্ধান করেছি। প্রকৃত ঘটনা হলো বিভাগের শিক্ষকদের সঙ্গে ওই শিক্ষকের স্বার্থগত দ্ব্ন্দ্ব ছিল। ওই দ্বন্দ্বের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে অমন ঘটনার ফাঁদে ফেলা হয় এবং নারীর জেন্ডারগত অবস্থানকে ব্যবহার করে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। সাধারণভাবে কোনও নারী শিক্ষার্থী যৌন হয়রানির অভিযোগ করলে জনমত তার পক্ষে যাবে। অভিযুক্ত গণ ট্রয়াল, মিডিয়া ট্রয়ালের শিকার হবেন। ফলে তদন্ত কমিটি নিরপেক্ষ তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়ে ওই শিক্ষককে দায় মুক্তি দিলে তা জনপরিসরে গ্রহণযোগ্য হতো না। তাই লাম-ছাম একটি শাস্তি দিয়ে ঘটনার নিষ্পত্তি করা হয়েছে। জনপরিসরকে সন্তুষ্ট করা হয়েছে।
উপর্যুক্ত ঘটনা শুধু নয় অমন অসংখ্যা ঘটনা খুঁজে পাওয়া যাবে সেখানে নারীর জেন্ডারগত অবস্থানকে ব্যবহার করে প্রতিপক্ষকে দমন করা হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ মিডিয়া ও জনপরিসরের চাপে গণ ট্রয়ালের মুখে পড়ে মুখ বাঁচাতে নির্দোষকে শাস্তি দিতে বাধ্য হচ্ছে। শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন ঘটছে তা নয়, অন্য অনেক প্রতিষ্ঠানেও এমন ঘটনা অহরহ ঘটে। আমার এই বক্তব্য প্রাথমিকভাবে মনে হতে পারে যে, আমি যৌনহয়রানিতে অভিযুক্তের পক্ষ নিচ্ছি। কিন্তু বাস্তবিকপক্ষে যৌন হয়রানির প্রকৃত ঘটনায় ভিক্টিমের পক্ষে সোচ্চার থাকা যেমন আমাদের নৈতিক দায়িত্ব তেমনি নারীর জেন্ডারগত অবস্থানকে ব্যবহার করে একজন নিরাপরাধ নিরীহ ব্যক্তিকে শুধুমাত্র কিছু স্বার্থগত কারণে অভিযুক্ত করার ঘটনায় যিনি ভিক্টিম হচ্ছেন তার পক্ষেও দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। এমন ঘটনা যে ঘটছে তার সর্বশেষ প্রমাণ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক ঘটনা। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রী ইভটিজিংয়ের মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপণ করেছেন। পরে তার অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় ওই ছাত্রী শাস্তির মুখে পড়েছে।
২০১৭ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে তার একজন নারী সহকর্মী অমন মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপন করেন। বিভাগে কিছু বিষয় নিয়ে স্বার্থগত দ্বন্দ্ব দেখা দেওয়ায় ওই নারী শিক্ষক তার জেন্ডারগত অবস্থান ব্যবহার করে পুরুষ সহকর্মীর বিরুদ্ধে যৌনহয়রানির অভিযোগ উত্থাপন করে।
সম্প্রতি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সহ-উপাচার্যের নিয়োগ স্থগিত করা হয়েছে। তিনি নিয়োগ পাওয়ার পর তার প্রতিপক্ষ গ্রুপ তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত একটি যৌন হয়রানির পুরনো অভিযোগ সামনে আনেন। ফলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বাধ্য হয়ে ওই নিয়োগ স্থগিত করে। কিন্তু প্রকৃত ঘটনা ভিন্ন ছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই শিক্ষক বিভাগের শিক্ষকদের স্বার্থগত দ্বন্দ্বের বলি হয়েছিলেন। তৎকালীন বিভাগীয় চেয়ারম্যানের ষড়ষন্ত্রে তার বিরুদ্ধে অমন অভিযোগ আনা হয়। এই একটি ঘটনাকে উদাহরণ হিসেবে নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে একটি উচ্চপর্যায়ের অনুসন্ধান কমিটির আহবান জানাই। কারণ শুধুমাত্র বিভাগের শিক্ষকদের স্বার্থগত দ্বন্দ্বের বলি হয়ে কোনও দক্ষ ও মেধাবী মানুষের সেবা প্রাপ্তি থেকে জাতি বঞ্চিত হতে পারে না। নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করে দেখা হোক প্রকৃতপক্ষে স্থগিতকৃত সহ-উপাচার্য যৌন হয়রানির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন নাকি বিভাগের শিক্ষকদের মধ্যে স্বার্থগত দ্বন্দ্বের কারণে নারীর জেন্ডারগত অবস্থানকে ব্যবহার করে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছিল। প্রকৃতঘটনা জানার অধিকার আমাদের রয়েছে।
যৌন হয়রানির বিচার হওয়া দরকার এই বিষয়ে কোনও দ্বিমতের সুযোগ নেই। অপরাধীর কঠোর শাস্তিকাম্য। কিন্তু পাশাপাশি নারীর জেন্ডারগত অবস্থানকে ব্যবহার করে প্রতিপক্ষ দমনে যৌন হয়রানির মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপন করা হচ্ছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা দরকার। এবং উপর্যুক্ত ঘটনা ঘটলে মিথ্যা অভিযোগকারীরও কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা দরকার। কারণ ওই ধরনের মিথ্যা অভিযোগের ফলে দুইটি বড় ক্ষতি হচ্ছে।
প্রথমত, প্রকৃত যারা যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন তাদের বিচার পাওয়ার পথ রুদ্ধ হচ্ছে। কারণ বারবার যদি নারীর জেন্ডারগত অবস্থানকে ব্যবহার করে প্রতিপক্ষ দমনে যৌন হয়রানির মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপন করা হয় তাহলে সমাজে অচিরেই প্রকৃত ঘটনা বিশ্বাসযোগ্যতা হারাবে।
দ্বিতীয়ত, যার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপিত হয় তাকে এক ধরনের ট্রমার ভেতর দিয়ে যেতে হয়। বিনা দোষে প্রতিপক্ষের যৌন হয়রানির রাজনীতিতে তার সম্মানহানি ঘটে। গণ ট্রায়াল ও মিডিয়া ট্রায়ালে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হন। সুস্থভাবে কাজ করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন। অনেক সময়ে তিনি ওই ট্রমা থেকে জীবনে আর কখনই ফিরতে পারেন না। ফলে তার মেধা, যোগ্যতা ও দক্ষতার সেবা থেকে জাতি বঞ্চিত হয়। অনেক মেধাবী মানুষের জীবদ্দশায় অকাল অপমৃত্যু ঘটে। সুতরাং যৌন হয়রানির বিষয়টি যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি নারীর জেন্ডারগত অবস্থানকে ব্যবহার করে মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপণ করার বিষয়টিও সমান গুরুত্বপূর্ণ।
ইউরোপের অন্যতম রুপবতী শহর হাঙ্গেরির বুদাপেস্টে সেন্ট্রাল ইউরোপীয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন সময়ে যৌন হয়রানি বিষয়ক ইস্যুতে কাজ করার সুযোগ হয়েছিল। ওই সময়ে ছাত্রসংসদে বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি নীতিমালার নিয়ে আলোচনা হয়। ছাত্রসংসদের একজন সদস্য হিসেবে ওই আলোচনার স্বার্থে ওই সময়ে বিদেশি কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন নীতিমালা ঘাঁটাঘাটি করেছিলাম। ওই নীতিমালায় স্পষ্ট করে বলা আছে, যৌন হয়রানির অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হলে অভিযোগকারীরও শাস্তি হবে।
এই লেখা লেখার জন্য বাংলাদেশে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন নীতিমালা আবারও দেখার চেষ্টা করেছি। এর মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় তাদের ওয়েবসাইটে যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধকল্পে অভিযোগ কমিটির কয়েকজনের নাম উল্লেখ করেছে দায় সেরেছে। কিন্তু কমিটির সদস্যদের নামের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে একটি পুর্ণাঙ্গ নীতিমালা থাকার কথা। কিন্তু ওই নীতিমালা অদৃশ্যকারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে নেই। এর ফলে প্রশ্ন উত্থাপিত হয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ কল্পে কোনও নীতিমালা আদৌ আছে কি?
যদি সত্যিকার অর্থে বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ করতে হয় তাহলে সবার আগে শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারীকে যৌন নিপীড়ন নীতিমালা সর্ম্পকে জানাতে হবে। সচেতন করতে হবে।
এক্ষেত্রে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে আছে। ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টসের (ইউল্যাব) ওয়েবসাইটে “যৌন হয়রানি প্রতিরোধ নীতিমালা” খুঁজে পেলাম। ওই নীতিমালায় সুস্পষ্ট করে বলা আছে: ‘অভিযোগকারীর অভিযোগ মিথ্যা ও ক্রটিপূর্ণ হলে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা সাপেক্ষে করা হবে।’ এছাড়া ওই নীতিমালায় নারী এবং পুরুষ উভয়ের অভিযোগ দেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। সাধারণভাবে জনপরিসরে ধারণা আছে নারীরা কেবল যৌন নিপীড়নের শিকার হন। কিন্তু পুরুষরাও যৌন নিপীড়নের শিকার হতে পারেন এবং তাদেরও প্রতিকার প্রাপ্তির অধিকার আছে। ইউল্যাবের যৌন হয়রানি প্রতিরোধ নীতিমালাটি আমার কাছে বেশ গোছানো ও আধুনিক মনে হয়েছে। তাই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্য বিশ্ববিদ্যালয় যারা এখনও নীতিমালা তৈরি করেনি তারা চাইলে ইউল্যাবের ওই নীতিমালাকে অনুসরণ করে সহজে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি প্রতিরোধ নীতিমালা প্রনয়ণ করতে পারে।
পরিশেষে, শুধু বিশ্ববিদ্যালয় নয়, সবক্ষেত্রে নারীর নিরাপদ বিচরণ নিশ্চিত করা দরকার। নারীর নিরাপদ বিচরণ নিশ্চিত না করতে পারলে মৌলবাদীরা নারীকে ঘরে বন্দি করতে সমাজকে সহজে প্রভাবিত করতে পারবে। নারীরা আধুনিক ও উন্নত জীবনযাপন থেকে বঞ্চিত হবেন। আর নারীর ওই নিরাপদ বিচরণ তখনই নিশ্চত করা যাবে যখন কর্মক্ষেত্রে নারীর যৌন হয়রানি প্রতিরোধ করা যাবে। কিন্তু পাশাপাশি নারীর জেন্ডারগত অবস্থানকে ব্যবহার করে যাতে কোনও ব্যক্তি বা গোষ্ঠী প্রতিপক্ষকে দমনে যৌন হয়রানির রাজনীতি না করতে পারে তাও নিশ্চিত করতে হবে। মিথ্যা অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযোগকারীর শাস্তির বিধান নিশ্চিত করতে হবে। কর্মক্ষেত্রসহ সকল ক্ষেত্রে নারীর পাশাপাশি পুরুষও সমান গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং নারীর জেন্ডারগত অবস্থানকে ব্যবহার করে মিথ্যা যৌন হয়রানির অভিযোগে পুরুষরাও যাতে হয়রানির শিকার নাহন তাও নিশ্চিত করা জরুরি।
লেখক: সহকারী অধ্যাপক, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
(প্রকাশিত লেখাটির মতামত লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত কলামের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে কোন আইনগত ও অন্য কোন ধরনের দায়-ভার মিরর টাইমস্ বিডি বহন করবে না)।