মিরর ডেস্ক : প্রায় ১৪০০ বছর আগে নাজিল হওয়া পবিত্র কোরআন আজও বিজ্ঞানীদের কাছে বিস্ময়। বিজ্ঞানের অনেক তত্ত্ব আছে, যেগুলোকে মিথ্যা প্রমাণ করেছে কোরআন। তারই একটি হচ্ছে, হার্ট বা হৃদপিণ্ড নিয়ে কোরআনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
বিজ্ঞানীরা এতদিন মনে করতেন, মানবদেহে চিন্তাভাবনার কেন্দ্রবিন্দু ব্রেইন বা মস্তিষ্ক। কিন্তু কোরআন বিজ্ঞানীদের সেই ধারণা ভুল প্রমাণ করে দিয়েছে।
বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস ছিল, আমাদের চিন্তাভাবনা থেকে সবকিছুই মস্তিষ্কপ্রসূত। কিন্তু পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা চিন্তাভাবনার জন্য ব্রেইন বা মস্তিষ্কের চেয়ে হার্টের কথাই বেশি উল্লেখ করেছে। সেই অর্থে কোরআনে মস্তিষ্কের কথা সেভাবে আসেনি।
বিজ্ঞানের ভাষ্যমতে, ব্রেইনের গুরুত্ব বেশি। কারণ হার্ট একটি অঙ্গ মাত্র, যা কেবল রক্ত পরিশোধন ও পরিচালন করে। সেই অর্থে মাথাতেই থাকে সব ধরনের জ্ঞান-বুদ্ধি।
কিন্তু কোরআনে আল্লাহ তায়ালা হার্টের গুরুত্ব বেশি দিয়েছেন। সুরা সিজদাহর ৯ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেছেন, তারপর তিনি মানুষকে সুঠাম করেছেন এবং তাতে নিজের রূহ ফুঁকে দিয়েছেন। আর তিনি তোমাদের জন্য কান, চোখ ও হৃদয় সৃষ্টি করেছেন। তোমরা খুব সামান্যই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর।
এ ছাড়া আল্লাহ তায়ালা কোরআনে মানুষের হৃদয়ে রোগের কথাও বলেছেন। যাদের অন্তরে রোগ আছে এবং যাদের অন্তর তালাবদ্ধ। তারা সুপথপ্রাপ্ত হয় না। তারা মন্দ কাজে জড়িয়ে পড়ে।
সুরা আহযাবের ১২ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, আর স্মরণ কর, যখন মুনাফিকরা ও যাদের হৃদয়ে ছিল ব্যাধি। তারা বলছিল, আল্লাহ ও তার রাসূল আমাদেরকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তা প্রতারণা ছাড়া কিছু নয়।
কোরআনের বাণী যে অক্ষরে অক্ষরে সত্য, তা হার্ট নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণায় ওঠে এসেছে।
গবেষণা বলছে, মানুষের হার্ট বা হৃদয়ের নিজস্ব একটা মন আছে, যা মস্তিস্ক থেকে আলাদাভাবে চিন্তা করে এবং নিজস্ব কিছু ধ্যান-ধারণা পোষণ করে। মস্তিষ্কের মতোই হার্টের নিজস্ব তথ্য সংরক্ষণ এবং প্রক্রিয়াকরণের ক্ষমতা রয়েছে বলেও গবেষণায় জানা গেছে।
বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে দেখতে পেয়েছেন, হার্ট প্রতিনিয়ত ব্রেইনের সাথে সংযোগ রক্ষা করে চলে। এটা অনেকটা এমন যে, তাদের মধ্যে সব সময় কথাবার্তা চলছে।
তবে মস্তিস্কের তুলনায় হৃদয়ই বেশি সিগনাল পাঠায়, অর্থাৎ হৃদয় মস্তিস্ককে বলে দেয় তুমি এভাবে ভাবো বা এভাবে চিন্তা করো। সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয় হচ্ছে, ব্রেন এবং হার্ট দুটোই অনেক সময় ভবিষ্যতের সংকেত পেয়ে থাকে। সেদিক থেকেও ব্রেইনের চেয়ে এগিয়ে আছে হার্ট।
একটি মানবশিশু ভ্রূণ অবস্থাতে থাকতেই হৃদস্পন্দন শুরু হয়। অর্থাৎ একটি ভ্রূণে মস্তিষ্ক গঠিত হওয়ার আগেই হৃদপিণ্ড কাজ শুরু করে দেয়। কুরআনের এমন বিস্ময়ের কথা বিজ্ঞানীরা অতি সম্প্রতিই জানতে পেরেছেন। বিগত কয়েক দশকের বেশি সময় ধরে চালানো বিভিন্ন গবেষণায় জানা যায়, আবেগপূর্ণ তথ্য ৫-৭ সেকেন্ড আগেই জানতে পারে হার্ট।