মিরর ডেস্ক : মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তাআলার গুণবাচক নামের জিকির করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে পবিত্র কোরআনুল কারিম ও হাদিসে শরিফে।
কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আর সুন্দর নামগুলো আল্লাহরই। তোমরা তাকে সেই সব নামে ডাকবে, যারা তার নাম বিকৃত করে, তাদেরকে বর্জন করবে তাদের কৃতকর্মের ফল তাদেরকে দেওয়া হবে’। (সূরা: আরাফ, আয়াত: ১৮০)
ইমাম আবু জাফর তাবারি (র.) বলেন, আল্লাহর প্রতিটি গুণবাচক নামই ইসমে আজমের অন্তর্ভুক্ত। যদি কোনো লোক এটি নিয়মিত পড়ে তবে আল্লাহ এর দুনিয়া ও পরকালের সব কাজ সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করে দেবেন।
‘ইয়া যুল জালালি ওয়াল ইকরাম’ কেন পড়বেন?
আল্লাহর ৯৯টি নামের মধ্যে একটি নাম হলো ‘ইয়া যুল জালালি ওয়াল ইকরাম ’। এটি ইসমে আজম বা বড় নাম। জালাল শব্দের অর্থ মর্যাদাবান এবং ইকরাম অর্থ সম্মানিত। আল্লাহ বড় বা শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশ করতে যেসব নামে ডাকা হয়, সেগুলোকে বলে ইসমে আজম। আল্লাহর এই নামটি কোরআনে এসেছে ২ বার। সূরা আর রাহমান এর ২৭ নম্বর ও ৭৮ নম্বর আয়াতে।
ইয়া যুল জালালি ওয়াল ইকরামের অর্থ সমস্ত সৃষ্টি জগতের মালিক, যিনি সৃষ্টিকুল হতে ভয় পাওয়ার হকদার ও একমাত্র প্রশংসার যোগ্য, মহৎ, বড়, দয়া ও ইহসানের অধিকারী।
যুল জালালি ওয়াল ইকরাম এর ফজিলত
যুল জালালি ওয়াল ইকরাম মহান আল্লাহর গুণবাচক নামগুলোর একটি। আল্লাহকে ডাকার সময় এই নামের আগে যখন ইয়া যুক্ত করে বলতে হবে ‘ইয়া যুল জালালি ওয়াল ইকরাম’।
বিশ্বনবী রাসূলুল্লাহ (সা.) এক হাদিসে বলেছেন, ‘তোমরা সব সময় ইয়া যুল জালালি ওয়াল ইকরাম পড়াকে অপরিহার্য করে নাও’। (তিরমিজি, হাদিস: ৩,৫২৫) অর্থাৎ সব সময় এই নাম পড়ার প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নবীজি (সা.) নামাজ আদায়ের পরে বসা অবস্থায় বলতেন, ‘আল্লাহুম্মা আনতাস সালাম ওয়া মিনকাস সালাম তাবারাকতা ইয়া যুল জালালি ওয়াল ইকরাম’। অর্থাৎ ‘হে আল্লাহ, আপনি সালাম (শান্তি নিরাপত্তা প্রদানকারী, আপনার পক্ষ থেকেই সালাম (শান্তি ও নিরাপত্তা) আসে। আপনি বরকতময়, হে মহিমময় মহানুভব’। (মুসলিম, হাদিস: ৫৯১-৫৯২)
একবার হজরত আনাস (রা.) নবীজি (সা.) এর সঙ্গে বসা ছিলেন। তখন ঐখানে এক লোক এসে নামাজ পড়ে এই দোয়া করল, ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা বিআন্না লাকাল হামদু, লা-ইলাহা ইল্লা আনতাল মান্নান, বাদিউস সামাওয়াতি ওয়াল আরদ, ইয়া যুল জালালি ওয়াল ইকরাম, ইয়া হাইয়্যু ইয়া কাইয়্যুম’।
রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘তুমি আল্লাহর দরবারে ইসমে আজমের মাধ্যমে দোয়া করেছ, যে নামে ডাকলে মহান আল্লাহ সাড়া দেন এবং কিছু চাইলে তা দান করেন’। (সুনানে তিরমিজি: ৩,৫৪৪, আবু দাউদ ১,৪৯৫, নাসাঈ, ১৩০)
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বান্দাদের সব সময় তার জিকির করার নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন, ‘হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ করো এবং সকাল সন্ধ্যায় তার পবিত্রতা ঘোষণা করো’। (সূরা: আহজাব, আয়াত: ৪১-৪২)
কোরআনে আছে, ‘হে বিশ্বাসীগণ, তোমরা যখন কোনো দলের মোকাবিলা করবে, তখন অবিচলিত থাকবে আল্লাহকে বেশি করে মনে করবে যাতে তোমরা সফল হও’। (সূরা: আনফাল, আয়াত: ৪৫)