মিরর ডেস্ক : গত এপ্রিল জুড়ে ছিল ভয়াবহ তাপপ্রবাহ। তারপর মে মাসের শুরুতে কয়েক দিন বৃষ্টির দেখা মেলে। মাঝে কয়েকদিনের বিরতির পর আবার গরম বাড়তে থাকে। এ মুহূর্তে তাপপ্রবাহ দেশের ৬৪ জেলায় ছড়িয়েছে। বাতাসে জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে রয়েছে অস্বস্তি। জনজীবন বিপর্যস্ত হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) গরমে অসুস্থ হয়ে দুই জেলায় তিনজন মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া বেশ কয়েকটি জেলায় অসুস্থতার খবরও পাওয়া যায়। এ তাপপ্রবাহ থাকবে আরও দুদিন। এরপরই শনিবার থেকে বৃষ্টির আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এদিকে, সিলেটে হিট স্ট্রোকে শফিকুল ইসলাম (৩৫) নামের একজনের মৃত্যু হয়েছে। নগরীর জিন্দাবাজারের সিটি সেন্টার শপিং সেন্টারের সামনে হিট স্ট্রোকে তার মৃত্যু হয়। মৌলভীবাজারের জুড়ি উপজেলার নয়াগ্রামের বাসিন্দা আবু আহমদের ছেলে তিনি।
অন্যদিকে, সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় আজ হিটস্ট্রোকে দুইজন মারা গেছেন। তারা হলেন- উপজেলার বাঙ্গালা ইউনিয়নের রহিমপুর গ্রামের কৃষক বিষ্ণুপদ মজুমদার (৫১) ও বিনায়েকপুর গ্রামের ব্যবসায়ী ছাইদুল ইসলাম লাবলু (৫৭)। দুইজনই মাঠে প্রচণ্ড রোদের মধ্যে ধান কাটছিলেন।
তীব্র গরমে কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২৬ শিক্ষার্থী বৃহস্পতিবার দুপুরে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। এদের মধ্যে ২৫ জনকে বিদ্যালয়েই প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করা হয়েছে। একজনকে হাসপাতালে পাঠালে তাকেও সুস্থ করে বাড়িতে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনিন্দ্য মণ্ডল।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার দেশের সব জেলায় মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে। বুধবার তাপপ্রবাহ ছিল ৫৮ জেলায়। তাপপ্রবাহ থাকবে আরও দুই দিন। শনিবার থেকেই বেশ কয়েকটি অঞ্চলে বৃষ্টি হয়ে তাপপ্রবাহের এলাকা কমে যাবে। সোমবার সারাদেশেই বৃষ্টিপাত হতে পারে।
আজ বৃহস্পতিবার দেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে পাবনার ঈশ্বরদীতে ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে গত সোমবার থেকে। সেদিন সাত জেলায় দাবদাহ ছিল, পরে তা বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে পড়ছে। মে মাসের দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এ মাসে দেশের কোথাও কোথাও এক থেকে তিনটি মৃদু অথবা মাঝারি তাপপ্রবাহ এবং এক থেকে দুটি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। বঙ্গোপসাগরে এক বা দুটি লঘুচাপ হতে পারে, যার মধ্যে একটি মাসের দ্বিতীয়ার্ধে নিম্নচাপ অথবা ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।
চলতি মাসে নদ-নদীতে স্বাভাবিক প্রবাহ বিরাজ থাকতে পারে। তবে উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে উত্তরাঞ্চল ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কোথাও কোথাও পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বয়ে যেতে পারে।