ঢাকা : প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের (পিজিআর) সদস্যদের কর্তব্যপরায়ণতা, নিষ্ঠায় অটল এবং ‘চেইন অব কমান্ডে’র প্রতি আস্থাশীল থেকে অর্পিত দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালনের নির্দেশ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
পিজিআরের ৪৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা সেনানিবাসের পিজিআর সদর দফতরের শহিদ ক্যাপ্টেন হাফিজ হলে পিজিআরের দরবারে দেওয়া ভাষণে এ নির্দেশ দেন তিনি।
রাষ্ট্রপতি বলেন, দেশ ও জাতি যে মহান দায়িত্ব আপনাদের ওপর অর্পণ করেছে সেই দায়িত্ব পালনে যেকোনো আত্মত্যাগ জাতির ইতিহাসে আপনাদের চিরস্মরণীয় করে রাখবে।
পিজিআরের সদস্যদের স্বাচ্ছন্দ্যে প্রশিক্ষণ গ্রহণ, শৃঙ্খলা বজায় রাখা, আত্মোন্নয়নে মনোযোগী হওয়া ও সর্বোপরি সৈনিক হিসেবে নিজের শারীরিক যোগ্যতাকে সর্বদা অক্ষুন্ন রাখারও উপদেশ দেন তিনি। একই সঙ্গে পেশাগত মান ও দক্ষতাকে বিশ্বমানে পৌঁছাতে বিদ্যমান প্রশিক্ষণ কর্মসূচিকে প্রয়োজনে আরো জোরদার করারও পরামর্শ দেন রাষ্ট্রপ্রধান।
মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, একটি পেশাদার সেনাবাহিনীর অংশ হিসেবে সমসাময়িক বাস্তবতার পাশাপাশি অতীত ইতিহাস ও ঘটনাপ্রবাহ থেকেও পিজিআরকে আলোকিত ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।
রাষ্ট্রপতি উল্লেখ করেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি জাতীয় নিরাপত্তা ও রাষ্ট্রীয় অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালের ৫ জুলাই প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্ট প্রতিষ্ঠা করেন। বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া পিজিআরের সদস্যরা দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করছেন। নিঃসন্দেহে এটি খুবই আনন্দ ও গৌরবের বিষয়।
তিনি আরো বলেন, পিজিআর প্রতিষ্ঠার মাত্র ৪২ দিনের মাথায় মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতক চক্রের ষড়যন্ত্রে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবসহ তার পরিবারের সদস্যরা বিপদগামী একদল সেনা কর্মকর্তার নির্মম বুলেটের আঘাতে শহিদ হন। স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টাকে সেদিন আমরা রক্ষা করতে পারিনি, যা ছিল আমাদের অমার্জনীয় অপরাধ। সেদিন যদি পিজিআর আজকের মতো সুসংগঠিত ও চৌকস হতো তাহলে হয়তো ঘাতক দল জাতির পিতাকে হত্যা করতে পারতো না। বাঙালি ও বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির ইতিহাস অন্যরকম হতে পারতো।
রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, পিজিআরের ওপর অর্পিত দায়িত্ব একদিকে যেমন গুরুত্বপূর্ণ অন্যদিকে তেমন গৌরবময়। বিগত বছরগুলোতে বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান ছাড়াও অনেক দেশের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে তারা দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছেন। সরকার পিজিআরের সার্বিক উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেয়। ভবিষ্যতে এই রেজিমেন্টকে আরো সুসংহত ও আধুনিক করা হবে।
পিজিআরকে জাতির গর্ব উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, প্রতিষ্ঠাকাল থেকে আজ পর্যন্ত পিজিআরের সদস্যরা কর্তব্য পালনে আত্মত্যাগের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। দায়িত্ববোধ, পেশাগত উৎকর্ষ, দেশপ্রেম ও নিষ্ঠার সঙ্গে নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনের মাধ্যমে পিজিআরের সুনাম বহির্বিশ্বেও ছড়িয়ে দিতে হবে।
এ সময় সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, পিজিআর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খালেদ কামালসহ রাষ্ট্রপতির সংশ্লিষ্ট সচিব, ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা ও প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।