মিরর স্পোর্টস : চট্টগ্রামে আসার পর থেকেই অস্বস্তিকর সময় পার করছিল দুর্বার রাজশাহী। একে তো সিলেট থেকে শেষ ম্যাচটা হেরে আসতে হয়েছে। তার ওপর ফ্র্যাঞ্চাইজির কাছ থেকে পারিশ্রমিকের কোনো টাকাই না পাওয়ায় প্রথম দিন তো অনুশীলনই করেননি ক্রিকেটাররা!
এরপর কালকের দিনটাও গেছে টাকা টাকা করে। ফ্র্যাঞ্চাইজি কর্তৃপক্ষ কখন ক্রিকেটারদের পাওনা মেটাবে, কখন নিশ্চিত হওয়া যাবে যে দল পরদিন, মানে আজ দুপুরে খেলতে নামবে। সে অনিশ্চয়তা দূর হয়েছে কাল রাতে টিম হোটেলে ক্রিকেটারদের পাওনা মেটানো শুরুর পর। কিছু বকেয়া মেটানো হয়েছে আজও।
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আজ সেটারই প্রতিফলন দেখা গেল কি না, কে জানে! ব্যাটে–বলে দারুণ পারফরম্যান্স দেখিয়ে আবারও জয়ের ধারায় ফিরেছে দুর্বার রাজশাহী। আগে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ১৮৪ রান করে তারা ম্যাচ জিতেছে ৬৫ রানে, সেটাও ১৫ বল বাকি থাকতে। সিলেট অলআউট হয়ে গেছে ১১৯ রানেই। সাত ম্যাচে রাজশাহীর এটি তৃতীয় জয়। সমান ম্যাচ খেলে পঞ্চম হার সিলেটের।
মাঠের খেলায় অন্তত সে ধারাই দেখা যাচ্ছে। কাল চট্টগ্রাম পর্বের প্রথম দিনের দুটি ম্যাড়মেড়ে ম্যাচে গ্রাহাম ক্লার্কের সেঞ্চুরিটাই যা একটু বিনোদন দিয়েছিল। আজ দুর্বার রাজশাহী-সিলেট সিক্সার্সের প্রথম ম্যাচও উপহার দিল নিষ্প্রাণ টি-টোয়েন্টি।
সিলেটের ১৮৪ রান তাড়া করার ইনিংসে সিলেটের ব্যাটসম্যানদের চেয়ে রাজশাহীর বোলিং আর ফিল্ডিং নিয়েই বেশি বলতে হয়। ব্যাটিংয়ে জাকির হাসানের ২৮ বলে ৩৯ আর জাকের আলীর ২০ বলে ৩১ রান উল্লেখযোগ্য। দলটা যদিও টপ অর্ডারে ভরা, তবু জাকের আলীর মতো একজন হার্ড হিটারকে হয়তো আরেকটু আগে নামালেই বেশি সুবিধা পাবে সিলেট। কিন্তু তাঁকে ছয়েই নিয়মিত খেলিয়ে যাচ্ছে দলটা।
রাজশাহীর বোলারদের মধ্যে নতুন বলে বল করা বাঁহাতি স্পিনার সানজামুল ইসলাম ২৫ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। ২টি করে উইকেট পেয়েছেন তাসকিন আহমেদ, মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী ও আফতাব আহমেদ। তবে ফিল্ডিংয়ে বিশেষভাবে দৃষ্টি কেড়েছে অধিনায়ক এনামুল হক বিজয়ের তিনটি ক্যাচ, যার একটি তো একটু বেশিই ভালো। থার্ড ম্যান থেকে অনেকটা দৌড়ে এসে সামনে ঝাঁপিয়ে পড়ে নেওয়া এনামুলের ওই দুর্দান্ত ক্যাচেই ড্রেসিংরুমে ফিরেছেন জাকির হাসান।
এর আগে ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ দুটি দিন পার করেও হতাশ করেননি দুর্বার রাজশাহীর ব্যাটসম্যানরা। সিলেটের তুলনায় বড় হয়ে আসা জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামেও সিলেট স্ট্রাইকার্সের সামনে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৮৫ রানের লক্ষ্য দিয়েছে দলটা। রায়ান বার্লের চারটিসহ ইনিংসে ছক্কা ১২টি।
বড় ইনিংস কারও ব্যাট থেকেই আসেনি, তবে যখন যে উইকেটে ছিলেন, রানের গতিতে টান পড়তে দেননি। ১৫তম ওভারে আরিফুলকে পরপর তিন ছক্কা মারা বার্লের ২৭ বলে ৪১, বিজয়ের ২২ বলে ৩২, ইয়াসির আলীর ১০ বলে ১৯, শেষ দিকে মৃত্যুঞ্জয়ের ৬ বলে ১২—এ রকম ছোট ছোট সময়োচিত ইনিংসেই রাজশাহী চলে যায় সিলেটের ধরাছোঁয়ার বাইরে।