মিরর ডেস্ক : দুর্গাপূজা উপলক্ষে পশ্চিমবঙ্গে শুরু হয়েছে উৎসবের আমেজ। আর বাঙালির পাতে ইলিশ ছাড়া এই উৎসব যেন অপূর্ণই থেকে যায়। প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গে দুর্গাপূজার উপহার হিসেবে আসতো পদ্মার রূপালি ইলিশ। কিন্তু এবারের চিত্র পুরোপুরি ভিন্ন।
ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব অভ্যুত্থানে পতন হয়েছে শেখ হাসিনার ও তার সরকারের। শান্তিতে নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সেই সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, আগে বাংলাদেশের মানুষ ইলিশ পাবে, তারপরে অন্য দেশ। এরই ধারাবাহিকতায়, দুর্গাপূজায় ভারতে ইলিশ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
তবে পদ্মার ইলিশ চেয়ে বাংলাদেশ সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছে ভারতের হাওড়া ফিশ ইমপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন। সংস্থাটির সম্পাদক সৈয়দ আনোয়ার মাকসুদ জানিয়েছেন, সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশের সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের কাছে ইলিশ রপ্তানির আবেদন জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
সেই চিঠিতে লেখা হয়েছে, অত্যন্ত বিনয় ও শ্রদ্ধার সঙ্গে আপনাকে (মো. তৌহিদ হোসেন) জানানো যাচ্ছে যে, আমরা ১৯৯৬ সাল থেকে বাংলাদেশ থেকে ইলিশ মাছ আমদানি করে আসছি। প্রতি বছর পশ্চিমবঙ্গের পেট্রাপোল স্থলবন্দর দিয়ে আমরা পাঁচ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ আমদানি করেছি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে ২০১২ সালের জুলাইয়ে তৎকালীন সরকার ভারতে ইলিশ রফতানি বন্ধ করে দেয়, যার কারণ তারাই ভালো বলতে পারবে। তারপর থেকে আমরা ওই নিষেধাজ্ঞা শিথিলের আবেদন জানিয়ে আসছি, কিন্তু সাড়া পাইনি।
‘২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৩ এর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকার নির্দিষ্ট সময়ে পরিমাণ ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে। পাঁচ বছর ধরে প্রতি বছর দুর্গাপূজার সময় বাংলাদেশ থেকে ইলিশ এসেছে। এমন পরিস্থিতিতে আমরা আপনার সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করছি ও দুর্গাপূজার জন্য ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।’
চিঠিতে আরও লেখা হয়েছে, সফলভাবে বাংলাদেশের শাসনভার গ্রহণের জন্য আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে অভিনন্দন জানাই। আমাদের শুভকামনাসহ আমরা ভারতের সঙ্গে শক্তিশালী দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কসহ একটি ‘নতুন বাংলাদেশের’ দিকে তাকিয়ে আছি।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ছাড়াও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহা. সেলিম উদ্দিন, বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিনসহ কলকাতার ডেপুটি হাই-কমিশনার ও প্রথম সচিবের (বাণিজ্যিক) কাছে পাঠানো হয়েছে।