৬ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৩শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Mirror Times BD

পশ্চিমবঙ্গে ইডির তদন্তকারীদের ওপর হামলার নজিরবিহীন ঘটনা

দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ইডির কর্মকর্তারা। এ সময় সংবাদ সংগ্রহ করতে যাওয়া সাংবাদিকদেরও মারধর করা হয়। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় মনে করছেন, সাংবিধানিক পরিকাঠামো ভেঙে পড়ার কারণেই এমন ঘটনা ঘটেছে।

ইডির কর্মকর্তারা স্থানীয় সময় শুক্রবার সকাল সাতটার দিকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতে  তৃণমূলের যুব নেতা শাহজাহান শেখের বাড়িতে তল্লাশি করতে যান। কেন্দ্রীয় বহিনীকে সঙ্গে নিয়ে রেশন দুর্নীতির তদন্ত করতে গেছিলেন তারা।

শাহজাহানের বাড়িতে গিয়ে ডাকাডাকি করলেও তার সাড়া পাওয়া যায়নি। তখন তারা দরজা ভাঙতে যান। সেসময় তাদের ঘিরে ধরে মারধর করা হয়। কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের ধাক্কা মারতে মারতে সরিয়ে দেওয়া হয়। ইডির সহকারি ডিরেক্টর রাজকুমার রামের মাথা ফাটে। তার সিটি স্ক্যান করা হয়েছে। আহত হয়েছেন অঙ্কুর ও সোমনাথ দত্ত।

বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, শাহজাহানের প্রচুর অনুগামী ঘটনাস্থলে ভিড় করেন। তারা চিৎকার করতে থাকেন, মারমুখি হয়ে ওঠেন। ইডি, কেন্দ্রীয় বাহিনী ও সাংবাদিকদের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। ইডি কর্মকর্তাদের গাড়ির সামনের, পিছনের এবং পাশের কাচ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। ইডি-র কর্মকর্তাদের পুরো ঘিরে ফেলা হয়। তাদের গ্রামের বাইরে ভাগিয়ে দেয়া হয়। ইডি-র আধিকারিকরা সন্দেশখালি থানায় যান।

ভিডিওতে দেখা গেছে, কেন্দ্রীয় বাহিনী শাহজাহানের বাড়ির তালা ভাঙতে গিয়েছিলেন। কোলাপসিবল গেটে তালা লাগানো ছিল। কেন্দ্রীয় বহিনীর সদস্যরা লোহার রড দিয়ে, বাঁশ দিয়ে তালা ভেঙে গেট খোলার চেষ্টা করেন। তখনই শাহজাহানের অনুগামীরা হইহই করে রাস্তায় নেমে পড়েন। কেউ কেউ বাড়ির সামনে ইডির কর্মকর্তাদের গিরে ধরে মারধর শুরু করে।

সাংবাদিক ও চিত্রসাংবাদিকদেরও মারধর করা হয়েছে। নিউজ১৯-র সাংবাদিক অমিত জানিয়েছেন, সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের মারধর করা হয়েছে এবং গাড়ি ভাঙা হয়েছে। সিআরপিএফের সামনে এটা হয়েছে। তাকে ১০-১২ জন মিলে মাটিতে ফেলে ঘুষি, কিল মেরেছে। তাকে যখন তারা পাশে জলাশয়ে ফেলার জন্য উদ্য়োগী হয়, তখন কেন্দ্রীয় বাহিনীর কয়েকজন গিয়ে তাকে উদ্ধার করেন এবং গাড়িতে করে গ্রামের বাইরে পাঠিয়ে দেন।

ক্যামেরাম্যান বিপুলকেও মারা হয়। তাকেও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, লাথি, ঘুষি, মারা হয়েছে। হাত থেকে ক্যামেরা নিয়ে ভাঙা হয়েছে। মুখে, বুকে, পিঠে পেটে মারা হয়েছে। কোনোক্রমে তিনি প্রাণে বেঁচেছেন।

ক্ষুব্ধ বিচারপতি

কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায় সন্দেশখলি প্রসঙ্গে বলেছেন, রাজ্যপাল কেন বলছেন না, পশ্চিমবঙ্গে সংবিধানিক কাঠামো ভেঙে পড়েছে। এরপরই রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বলেছেন, এই ধরনের বর্বরতাকে রুখতে হবে সরকারকে। সরকার দায়িত্ব পালন করতে না পারলে দেশের সংবিধান ব্যবস্থা নেবে।

তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারকে এই সহিংসতা রোধ করার দায়িত্ব নিতে হবে। পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে হবে। নাহলে ফল ভোগ করতে হবে।

কেন হবে?

প্রবীণ সাংবাদিক জয়ন্ত ভট্টাচার্য ডিডাব্লিউকে বলেছেন, ‘এই ধরনের অরাজকতা আগে বিহার, উত্তরপ্রদেশে হতো। এখন সেখানে আর হয় না। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে হচ্ছে। কেন এই ধরনের ঘটনা ঘটবে?’ জয়ন্তর মতে, ‘এর দায় রাজ্যের ক্ষমতাসীন দলকে নিতে হবে। শুধু কেন্দ্রের ওপর আঙুল তুলে অভিোগ করলে মানুষ আর বিশ্বাস করবে না।’

আরেক প্রবীণ সাংবাদিক শরদ গুপ্তা ডিডাব্লিউকে জানিয়েছেন, ‘এই ধরনের ঘটনা কখনোই বরদাস্ত করা যায় না। তদন্তকারীদের তদন্তে বাধা দেয়া যায় না। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে বারবার এই অভিয়োগ উঠছে। এটা তাই কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। খুবই খারাপ ও নিন্দনীয় ঘটনা।’ ডয়চে ভেলে

⠀শেয়ার করুন

loader-image
Dinājpur, BD
ফেব্রু ৬, ২০২৫
temperature icon 20°C
clear sky
Humidity 28 %
Pressure 1012 mb
Wind 8 mph
Wind Gust Wind Gust: 10 mph
Clouds Clouds: 0%
Visibility Visibility: 10 km
Sunrise Sunrise: 06:46
Sunset Sunset: 17:52

⠀আরও দেখুন

Scroll to Top