এবার রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য ফাঁসের মামলা তথা সাইফার মামলায় খালাস পেলেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি। সোমবার (৩ জুন) ইসলামাবাদ হাইকোর্ট (আইএইচসি) তাদের এই মামলায় খালাস দেন।
সোমবার সাইফার মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার বিরুদ্ধে ইমরান খান ও মাহমুদ কুরেশির আপিল গ্রহণ করেন ইসলামাবাদ হাইকোর্ট। পরে আদালতের প্রধান বিচারপতি আমির ফারুক ও বিচারপতি মিয়াগুল হাসান আওরঙ্গজেব সংক্ষিপ্ত এক রায়ে তাদের বেকসুর খালাস দেন।
রায় ঘোষণা পর ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) বর্তমান চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার গোহর আলি খান বলেন, জাতি আজ দেখলো, আমরা ন্যায়বিচার পেয়েছি। ভিত্তিহীন মামলাটি থেকে ইমরান খান মুক্তি পেয়েছেন। আজ অতি খুশির দিন। আশা করি খুব শিগগিরই জাতি ইমরান খানকে কারাগারের বাইরে দেখবেন।
পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি। তার সপ্তাহখানেক আগেই সাইফার মামলায় ইমরান খান ও শাহ মাহমুদ কুরেশির ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। ৩০ জানুয়ারি দেশটির সরকারি গোপনীয়তা আইনের অধীনে একটি বিশেষ আদালত এ রায় দেন।
কী এই সাইফার মামলা?
গত বছরের ৫ আগস্ট তোশাখানা মামলায় পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে তিন বছরের সাজা দিয়েছিলেন নিম্ন আদালত। এর পাশাপাশি ১ লাখ রুপি জরিমানাও করা হয়েছিল তাকে। বলা হয়েছিল, অনাদায়ে আরও ৬ মাস কারাগারে থাকতে হবে তাকে ও পাঁচ বছর কোনো নির্বাচন লড়তে পারবেন না তিনি।
কিন্তু পরবর্তী সময়ে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট ইমরান খানের সাজা স্থগিত করে জামিনে মুক্তির নির্দেশ দেয়। কিন্তু তোশাখানা মামলার পরপরই দায়ের করা সাইফার মামলায় কারাগারেই থাকতে হয় তাকে। এমনকি, এই মামলার বিচারপ্রক্রিয়া চলতে থাকে কারাগারে। শেষপর্যন্ত এই মামলায় ইমরানকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হলো।
পাকিস্তানের ‘সেনাবাহিনী সমর্থিত’ প্রশাসন অভিযোগ দায়ের করেছিল যে ইমরান খান রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য রক্ষায় দায়িত্বহীনতা দেখিয়েছেন। কূটনৈতিক তারবার্তাটি ইমরান খানের হাতে তুলে দেন সাবেক মুখ্যসচিব আজম খান। পরে তারবার্তাটি কোথায় রেখেছেন, তা জিঞ্জেস করলে- ভুলে গেছেন বলে দাবি করে সেটি আর ফেরত দেননি।
৩০ জানুয়ারি রায়ের আগে বিশেষ আদালতের বিচারক আবুল হাসনাত জুলকারনাইনও ইমরান খানের কাছে সেই তারবার্তা কোথায় আছে জানতে চান। জবাবে ইমরান বলেন, আমি স্বীকারোক্তিতে আগেও বলেছি, তারবার্তা কোথায় আছে আমি জানি না। সেটি আমার কার্যালয়েই ছিল। ইমরানের এই বক্তব্যের পরেই সাজার রায় ঘোষণা করেন আদালত।
এদিকে ইমরানের বিরুদ্ধে দেওয়া এই রায়কে জালিয়াতির বিচার বলে আখ্যায়িত করেছে ইমরান খানের দল পিটিআই। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে (পূর্বে টুইটার) পোস্ট করা এক বিবৃতিতে দলটি বলেছে, পুরো পাকিস্তান ইমরান ও কোরেশির সঙ্গে আছে। আল্লাহর রহমতে আমাদের নেতা খব তাড়াতাড়িই আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন ও আমরা এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবো।সূত্র: ডন, জিও টিভি