মিরর ডেস্ক : গাজা যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই অসহায় ফিলিস্তিনিদের পক্ষে বেশ সরব আলজাজিরা। পাশাপাশি ইসরায়েল ও ইসরায়েলি সরকারকে বিশ্ব বিবেকের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখে চলেছে কাতারভিত্তিক এই সংবাদমাধ্যমটি। যুদ্ধের ময়দান থেকে একের পর এক অবিশ্বস্য সব প্রতিবেদন নিয়ে আসছেন আলজাজিরার সাংবাদিকরা। বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরছেন ইসরায়েলি নৃশংসতা ও ফিলিস্তিনিদের দুর্দশার কথা। তাই তো আলজাজিরার এই সোচ্চার কণ্ঠ বন্ধ করে দিতে যুদ্ধের পর থেকেই উঠেপড়ে লেগেছে ইসরায়েলি সরকার। এতদিন সেটা না করলেও এবার আলজাজিরা বন্ধ করতে পার্লামেন্টে আইন পাস করেছে নেতানিয়াহু সরকার।
রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গতকাল সোমবার (১ এপ্রিল) ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজা যুদ্ধের মধ্যে কাতারি স্যাটেলাইট টেলিভিশন নেটওয়ার্ক আলজাজিরার ইসরায়েলি কার্যালয় বন্ধ করে দেওয়ার কথা জানিয়েছেন।
সোমবার ইসরায়েলি পার্লামেন্ট নেসেটে ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি, এমন ধরনের বিদেশি গণমাধ্যম সাময়িকভাবে বন্ধ করতে একটি বিল তোলা হয়। পরে বিলটির অনুমোদন দেয় নেসেট।
নতুন আইন কার্যকর হলে আলজাজিরার ইসরায়েলি কার্যালয় ৪৫ দিনের জন্য বন্ধ করতে পারবেন নেতানিয়াহু ও ইসরায়েলি নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রিসভা। পরবর্তী সময়ে এই বন্ধের মেয়াদ আরও বাড়ানো যাবে। ফলে জুলাইয়ের শেষ পর্যন্ত বা গাজায় বড় ধরনের সামরিক অভিযান শেষ না হওয়া পর্যন্ত তা বলবৎ থাকবে।
ইসরায়েলের যোগাযোগমন্ত্রী শ্লোমো কারাই অভিযোগ করেছেন যে আলজাজিরা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে শত্রুতাকে উৎসাহিত করছে। আমাদের সরকারি প্রেস অফিস থেকে পরিচয়পত্র নিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে কাজ করবে, এমন একটি গণমাধ্যমেক কোনোভাবে সহ্য করা যায় না। বিশেষ করে যুদ্ধের সময় তো আরও না।
ইসরায়েলি সরকারের এমন পদক্ষেপের তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানিয়েছে আলজাজিরা কর্তৃপক্ষ। এমনকি এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
সোমবার এক বিবৃতিতে আলজাজিরা বলেছে, ইসরায়েলি সরকারের এই পদক্ষেপ হলো আরেক দফা উসকানির মাত্রা বৃদ্ধি। আলজাজিরাকে নীরব করে দিতে ধারাবাহিকভাবে ইসরায়েলি আক্রমণের অংশ হিসেবে এটা করা হয়েছে।
এ ছাড়া ইসরায়েলি সরকারের এই পদক্ষেপের সমালোচনা করেছে ইসরায়েলের প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি বলছে, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা বজায় রাখতে বিদেশি গণমাধ্যম খুব গুরুত্বপূর্ণ।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি কারিন জিন-পিয়েরে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেন, যদি এটা সত্য হয়, তাহলে এই ধরনের পদক্ষেপ উদ্বেগজনক।