২৩শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৯ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Mirror Times BD

হাইকোর্টের রায়ে স্থিতাবস্থা: মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের পরিপত্র বহাল

ঢাকা : সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর এক মাসের স্থিতাবস্থা জারি করেছেন আপিল বিভাগ। এই আদেশের ফলে সব কোটা পদ্ধতি বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র আপাতত বহাল থাকছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

বুধবার (১০ জুলাই) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। অন্যদিকে রিটকারীদের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহ্ মঞ্জুরুল হক।

এ বিষয়ে কিছু পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশনা দিয়ে সর্বোচ্চ আদালত বলেছে, কোটা নিয়ে এখন কোনও কথা বলা যাবে না। হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হলে আপিল বিভাগ আবার বিষয়টি শুনবে। এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ৭ আগস্ট।

আদেশের সঙ্গে তিনটি পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশনা দিয়েছেন আপিল বিভাগ। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যেতে বলেছেন আদালত। সেইসঙ্গে দেশের সব দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টর এবং অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানরা তাদের ছাত্রছাত্রীদের নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরিয়ে নিয়ে শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন আদালত। আর সংক্ষুব্ধদের উদ্দেশে আদালত বলেন, কোনও শিক্ষার্থী যদি মামলায় যুক্ত হতে চান, আইনজীবীর মাধ্যমে যুক্ত হতে পারবেন। শুনানি হলে তখন তাদের কথাও শোনা হবে।

আদেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, আপিল বিভাগ প্রয়োজনে সংবিধানের ১০৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী হাইকোর্টের রায় সংশোধন কিংবা এ বিষয়টি নিয়ে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটিও করতে পারে।

পরে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন গণমাধ্যমে বলেন, আপিল বিভাগ সাবজেক্ট ম্যাটারে স্থিতাবস্থা জারি করেছে। ফলে হাইকোর্টের রায়ের আগে যেমন ছিল, সব তেমন থাকবে। তার আগে কোটা বাতিল-সংক্রান্ত ২০১৮ সালের পরিপত্র কার্যকর ছিল, সেটা থাকবে।

শিক্ষার্থীদের তুমুল আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে নবম থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত নারী কোটা ১০ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ এবং জেলা কোটা ১০ শতাংশ বাতিল করে পরিপত্র জারি করে সরকার। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে কোটা বাতিল হলেও তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পদে কোটা ব্যবস্থা আগের মতোই বহাল থাকবে বলে ওই পরিপত্রে বলা হয়।

ওই পরিপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান অহিদুল ইসলামসহ সাত জন। আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত ৫ জুন হাইকোর্ট মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। এ বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। তবে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।

পরে গত ৯ জুন সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দিয়েছিলেন চেম্বার আদালত। আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন।

গত ৪ জুলাই এ বিষয়ে আপিল বিভাগে শুনানির দিন ধার্য ছিল। তবে রিটকারীর পক্ষে সময়ের আবেদনের পর হাইকোর্টের রায়ই আপাতত বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হলে রাষ্ট্রপক্ষকে লিভ টু আপিল (নিয়মিত আপিল) করতেও বলা হয়ে আদেশে। পাশাপাশি মামলার শুনানি মুলতবি রাখার আদেশ দেন আদালত। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

সেদিন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেছিলেন, সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় বহাল থাকবে, নাকি বাতিল হবে এ বিষয়ে আপিল বিভাগই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।

এদিকে গত ৮ জুলাই রাষ্ট্রপক্ষের আরেক আবেদনের পর সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে শুনানির জন্য আজ বুধবার (১০ জুলাই) দিন নির্ধারণ করেছিলেন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম।

⠀শেয়ার করুন

loader-image
Dinājpur, BD
মার্চ ২৩, ২০২৫
temperature icon 21°C
scattered clouds
Humidity 73 %
Pressure 1015 mb
Wind 4 mph
Wind Gust Wind Gust: 6 mph
Clouds Clouds: 35%
Visibility Visibility: 10 km
Sunrise Sunrise: 06:06
Sunset Sunset: 18:17

⠀আরও দেখুন

Scroll to Top