ঢাকা : শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, চামড়া শিল্প খাতের উন্নয়নে স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদি করণীয় নির্ধারণ করা হয়েছে। আসন্ন কোরবানির ঈদ উপলক্ষে স্বল্প মেয়াদি ও চামড়া শিল্প খাতের সার্বিক উন্নয়নে দীর্ঘ মেয়াদি করণীয় নির্ধারণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘চামড়া ব্যবসায়ী ও পাইকাররা যাতে পুঁজির সমস্যায় না পড়েন ও সহজ শর্তে ঋণ পান, সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’
মঙ্গলবার (১২ মে) রাজধানীর মতিঝিলে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ‘চামড়া শিল্প খাতের উন্নয়নে সুপারিশ প্রদান ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের লক্ষ্যে গঠিত টাস্কফোর্স’ এর সপ্তম সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
সভায় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানাসহ টাস্কফোর্সের সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের চামড়া শিল্প খাতে সংরক্ষণ সুবিধা বাড়াতে হবে, যাতে চামড়া নষ্ট না হয়। চামড়া ব্যবসায়ী ও পাইকাররা যাতে পুঁজির সমস্যায় না পড়েন ও সহজ শর্তে ঋণ পান, সে বিষয়েও পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’
নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, ‘কোরবানির ঈদে পশুর চামড়া এতিমখানাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়ে থাকে। এর সঙ্গে আমাদের ধর্মীয় অনুভূতি জড়িত।’ শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘কোরবানির চামড়া সঠিকভাবে ছাড়ানো, সংরক্ষণ ও মানসম্মত পরিবেশ নিশ্চিতকরণে সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘কোরবানির ঈদে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে আগের অবস্থা আর নেই। এক্ষেত্রে আমরা আগের চেয়ে অনেক উন্নতি করেছি।’
সভায় অন্যান্য বছরের মতো এবারও আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহায় কোরবানির চামড়ার মূল্য নির্ধারণ এবং চামড়া সঠিকভাবে ছাড়ানো, সংগ্রহ ও সংরক্ষণের নিমিত্ত বিজ্ঞাপন বা টিভিসি আকারে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারের ব্যবস্থা করা, স্থানীয়ভাবে চামড়া সংগ্রহ এবং পর্যাপ্ত লবণ দিয়ে চামড়া সংরক্ষণের জন্য কৌশলগত স্থানে অস্থায়ী সংরক্ষণাগার নির্মাণ, কোরবানির পশুর চামড়ার পাচার রোধ, চামড়া সংগ্রহ ও পরিবহন কার্যক্রমে কোনও ধরনের চাঁদাবাজি, বিশৃঙ্খলা বা বাধার সৃষ্টি না হয় এবং চামড়া নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াসহ গণমাধ্যমে যেন কোনও গুজব না ছড়ায়, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এছাড়া সিইটিপি’র পরিশোধন ক্ষমতার মধ্যে সীমিত রাখার লক্ষ্যে কোরবানির পরবর্তী সাত দিনের মধ্যে ঢাকার বাইরে থেকে যাতে কোরবানির পশুর চামড়া ঢাকার ভেতরে প্রবেশ করতে না পারে, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। চামড়া শিল্পনগরীতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে রেশনিং পদ্ধতিতে ইফ্লুয়েন্ট ডিসচার্জ করা, সারা দেশে পর্যাপ্ত লবণ সরবরাহ নিশ্চিতকরণসহ এতিমখানাগুলোতে বিনামূল্যে লবণ সরবরাহ করতে বিসিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে মর্মে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় বিটিএ-এর প্রতিনিধির অনুরোধে চামড়া ব্যবসায়ীদের স্বার্থে চামড়া ব্যবসায়ীদেরকে ব্যাংক কর্তৃক সহজ শর্তে ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ও বাংলাদেশ ব্যাংককে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়। সাভারে অবস্থিত সিইটিপি’র মান উন্নয়নসহ পরিবেশ মন্ত্রণালয় কর্তৃক নির্ধারিত প্যারামিটারগুলোর অগ্রগতি এবং পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ কর্তৃপক্ষ (পিপিপিএ) কর্তৃক গৃহীত কার্যক্রমের অগ্রগতি অবহিত করা হয়। সভায় উপস্থিত রাজউকের প্রতিনিধি হাজারীবাগের ট্যানারি শিল্পের বর্তমানে অব্যবহৃত জমিতে ভবন নির্মাণের জন্য আগামী জুলাই থেকে নকশা অনুমোদন করা হবে বলে সভাকে অবহিত করেন। সভায় আলোচিত সব বিষয়ে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করা হয়।